সংবাদদাতা, চাঁচল: দু’দশক ধরে ভবন ছাড়াই চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। খাতায় কলমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও বাস্তবে তা ‘অদৃশ্য’। গাছতলায় বসে চলছে ক্লাস। মালদহের চাঁচল ২ ব্লকের ভাকরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এভাবেই চলছে পড়াশোনা। সেখানে ২০০৩ সালে নয়াটোলা শিশু শিক্ষা কেন্দ্র (এসএসকে) চালু হলেও ভবন হয়নি। শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষায় খোলা আকাশের নীচে আমগাছের তলায় ২১ বছর ধরে পাঠদান চলছে। এই অব্যবস্থা নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন অভিভাবকেরা। প্রশাসনিক উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন তাঁরা। দ্রুত ভবন নির্মাণের দাবি উঠেছে নয়াটোলায়।
চতুর্থ শ্রেণির পর্যন্ত সেখানে খাতায় কলমে মোট ৩৩ জন পড়ুয়া থাকলেও গড়ে প্রতিদিন ১০ জন আসে। কোনওদিন আরও কম। রয়েছেন একজন মুখ্য ও দু’জন সহায়িকা। ভবন না থাকায় পড়ুয়ারা স্কুলমুখী হচ্ছে না বলে দাবি সহায়িকাদের। এসএসকের মুখ্য সহায়িকা নারগিস খাতুন বলেন, ভবন নির্মাণের জন্য কেন্দ্রের নিজস্ব জমি রয়েছে। ২০১৪ সালে টাকাও বরাদ্দ হয়। প্রায় ৩ লক্ষ টাকা সঞ্চিত রয়েছে। কার খামখেয়ালিপনায় ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে না, জানি না। বিডিও শান্তনু চক্রবর্তী বলেন, স্কুলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কিছু সমস্যা থাকায় টাকা তোলা যাচ্ছে না। তা ঠিক হলে দ্রুত ভবন নির্মাণ হবে।
এসএসকের আরেক সহায়িকা রুবিয়া খাতুন বলেন, বৃষ্টি হলে অন্যের বাড়িতে ছাত্রদের নিয়ে গিয়ে পড়ানো হয়। গ্রীষ্মকালে রোদের তাপে পড়ুয়ারা ক্লাস করে না। এখন, শীতে মাটিতে মাদুর পেতে পড়ুয়াদের পড়ানো হচ্ছে।
ভবনের পাশাপাশি শৌচালয়ও না থাকায় সমস্যা প্রকট হচ্ছে। সহায়িকা সালিমা সুলতানা বেগমের কথায়, আমরাও চাই স্কুলের পরিকাঠামো সুস্থভাবে গড়ে উঠুক।
এখনও এসএসকের কোনও পরিকাঠামো গড়ে না ওঠায় হতাশ ও ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। কালো বেগম নামে এক পড়ুয়ার অভিভাবক বলেন, স্কুল ঘর নেই। তাই নাতি মাঝেমাঝেই ফাঁকি মারে। পড়াশোনাও ঠিকঠাক হয় না।
প্রশাসনের উদাসীনতার জন্যই ঘরবিহীন স্কুলে পড়াশোনা করতে হচ্ছে পড়ুয়াদের। এমনটাই দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দা মর্জিনা খাতুন দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন।