• প্রসূতি বিভাগের সামনে আকাশের নীচে দিন-রাত কাটাতে হয় রোগীর পরিজনদের
    বর্তমান | ৩০ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: বদলায়নি ছবি। জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের প্রসূতি বিভাগের সামনে খোলা আকাশের নীচেই রাত কাটাতে হয় রোগীর পরিজনদের। সন্ধ্যার পর থেকেই পারদ নামছে তিস্তাপাড়ের শহরে। ফলে রাতে খোলা জায়গায় রাত কাটাতে গিয়ে জবুথবু অবস্থা হচ্ছে প্রসূতি বিভাগে চিকিৎসাধীন রোগীর বাড়ির লোকজনকে। অনেককে আবার চার-পাঁচদিন কিংবা এক সপ্তাহ থাকতে হচ্ছে হাসপাতালে। ঠান্ডায় নিউমোনিয়া হয়ে যাচ্ছে তাঁদের অনেকেরই।


    অভিযোগ, মেডিক্যালের প্রসূতি বিভাগের সামনে একটি শেড থাকলেও তাতে সবার জায়গা হয় না। ফলে খোলা আকাশের নীচেই দিন-রাত কাটাতে হয় বহু মানুষকে। ঠান্ডার হাত থেকে বাঁচতে কেউ মাথার উপর পলিথিন টাঙিয়ে নিয়েছেন। কেউ আবার কম্বল মুড়ি দিয়েই কোনওমতে রাত কাটাচ্ছেন। এনিয়ে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রোগীর পরিজনরা। তাঁদের বক্তব্য, বর্ষায় ভিজতে হয়। শীতে কাঁপতে হয়। কয়েকশো মানুষকে এভাবে পড়ে থাকতে দেখেও মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষের কোনও হেলদোল নেই। মাথার উপর একটা শেড করে দেওয়ারও প্রয়োজন বোধ করেন না তারা।


    মেডিক্যালের অধ্যক্ষ প্রবীর দেব বলেন, প্রসূতি বিভাগের সামনে রোগীর বাড়ির লোকজনের জন্য নতুন করে প্রতীক্ষালয় তৈরি হবে। প্রস্তাব পাঠানো আছে। টাকা বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু হবে। মেডিক্যালের সুপার ডাঃ কল্যাণ খাঁ বলেন, প্রসূতি বিভাগের সামনে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা প্রতীক্ষালয় তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে।  


    কিছুদিন আগেই জলপাইগুড়ি মেডিক্যালের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে স্বাস্থ্যদপ্তরের কর্তারা এসেছিলেন। সেসময় প্রসূতি বিভাগের সামনে রোগীর পরিজনদের পড়ে থাকার বিষয়টি নজর এড়ায়নি তাঁদের। কীভাবে রোগীর বাড়ির লোকজনকে অপেক্ষা করতে হয়, সেই ‘দুর্বিষহ’ অবস্থার ছবিও তুলে নিয়ে যান স্বাস্থ্যকর্তারা। কিন্তু তারপরও শেড তৈরির ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি মেডিক্যাল কর্তৃপক্ষ। যদিও এনিয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাফাই, প্রসূতি বিভাগের আশেপাশে আরও প্রতীক্ষালয় রয়েছে। কিন্তু সেখানে থাকতে চান রোগীর বাড়ির লোকজন। একেবারে প্রসূতি বিভাগের সামনে থাকবেন বলেই খোলা আকাশের নীচে থাকতে হয় তাঁদের।


    জলপাইগুড়ি সদরের বিধায়ক ডাঃ প্রদীপকুমার বর্মা বলেন, আমার বিধায়ক কোটা থেকে মেডিক্যালের প্রসূতি বিভাগের সামনে প্রতীক্ষালয় ও পানীয়জলের ব্যবস্থা করে দেওয়ার ইচ্ছে রয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জায়গা দেখতে বলা হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)