• বাংলাজুড়ে ‘কাটা জল’-এর বিরুদ্ধে অভিযান,  ১২৫টি অভিযোগ দায়ের
    বর্তমান | ৩০ নভেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘কাটা জল’। গ্রামবাংলায় এখন মুখে মুখে ফিরছে এই দু’টি শব্দ। কাটা তেলের কথা সবারই জানা। কিন্তু কাটা জল কী? ‘জল জীবন মিশন’ প্রকল্পে বাড়ি বাড়ি পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার কাজ চলছে। কেন্দ্রীয় প্রকল্প হলেও এক্ষেত্রে ৭৫ শতাংশের বেশি টাকা খরচ করছে রাজ্যই। ইতিমধ্যে রাজ্যের ৯৩ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে। ১ কোটি ৭৫ লক্ষ বাড়িতে সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজ চলছে জোরকদমে। এই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে এক শ্রেণির অসাধু কারবারি। পানীয় জলের পাইপলাইন থেকে জল টেনে তারা ব্যবসায়িক স্বার্থে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ। চাষের কাজ তো আছেই, তার বাইরে কেউ কার ওয়াশ (গাড়ি ধোয়া)-এর কাজ চালাচ্ছে পাইপ থেকে অবৈধভাবে জল টেনে নিয়ে, কেউ আবার মাছ চাষের পুকুর ভরে নিচ্ছে ওই জলে। এমনকী এই জল ২০ লিটারের প্লাস্টিক জারে ভরে বিক্রিও চলছে দেদার। আইসক্রিম কারখানার জলের চাহিদাও মিটছে অবৈধভাবে পাইপ থেকে টেনে নেওয়া জলে। গ্রামেগঞ্জে মানুষের মুখে মুখে এই জলই হয়ে উঠেছে ‘কাটা জল’। 


    মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পর এই ঘটনা ঠেকাতে কোমর বেঁধে নেমেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। মাত্র দু’দিনে প্রায় সাড়ে চার হাজার (৪৩৬৮) জায়গায় অবৈধভাবে জল টেনে নেওয়ার ঘটনা হাতেনাতে ধরেছেন দপ্তরের কর্মী-আধিকারিকরা। ১২৫টি ক্ষেত্রে থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে। সূত্রের খবর, এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। রাজ্যজুড়ে লক্ষাধিক জায়গায় ‘কাটা জল’-এর কারবার নজরে এসেছে। জায়গাগুলি কেবল চিহ্নিত করাই নয়, অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তের বাড়ির জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কাজও শুরু করে দিয়েছে সরকার। 


    নবান্ন সূত্রে খবর, রীতিমতো জেলাওয়াড়ি তালিকা তৈরি করে কাটা জলের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। এই ধরনের ঘটনা কমবেশি সব জেলাতেই ধরা পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক অভিযোগ পাওয়া হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। এই জেলায় প্রায় ১৭০৬টি জায়গায় ‘কাটা জলের’ বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। নদীয়ায় ৯৭৭টি, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৮৮টি, হাওড়ায় ৩১৫টি এমন ঘটনা ধরা পড়েছে। কোচবিহার, মালদহ, পশ্চিম বর্ধমান, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা থেকেও ভূরি ভূরি অভিযোগ সামনে আসতে শুরু করেছে বলে দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)