জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্য়ুরো: কেন্দ্রের ওয়াকফ সংশোধনী বিলের বিরুদ্ধে পথে তৃণমূল। 'ভারতবর্ষের সংবিধানকে আপনি সম্মান দেন না, সংবিধানকে বোঝার মতো ক্ষমতা আপনার নেই', ধর্মতলায় সমাবেশ থেকে মোদীকে নিশানা করলেন তৃণমূল সাংসদ কল্য়াণ বন্দ্যোপাধ্যায়।
কল্যাণ বলেন, 'ধর্মনিরপেক্ষ দেশে কোনও ভেদাভেদ করা যায় না। মানুষের অধিকারকে কেড়ে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশে বা পাকিস্তানে আপনি পাবেন না। বা আপনি ইরানে যান, ইরাকে যান, তাদের সংবিধানে সেকুলার কথাটা খুঁজে পাবেন না। কিন্ত ভারতবর্ষ এমন এক দেশ, তাকে দেখতে হলে সেকুলার। ভারতবর্ষের আইন, ভারতবর্ষের মানসিকতা, ভারতবর্ষের মানুষ সংবিধানকে মেনে চলবে। সংবিধানের প্রিঅ্যামবেল হচ্ছে সংবিধানের চোখ। সংবিধানটা কী যদি বুঝতে হয়, তাহলে যে চোখ দিয়ে দেখতে হবে। সেই চোখটাই হচ্ছ প্রিঅ্যামবেল। চোখকে বন্ধ করে অন্ধ হয়ে কখনও কোনও জিনিস দেখা যায় না। আজ যদি মোদীজি আপনি অন্ধ হয়ে যেতে চান, ভারতবর্ষের সংবিধানকে আপনি সম্মান দেন না, সংবিধানকে বোঝার মতো ক্ষমতা আপনার নেই'।
ঘটনাটি ঠিক কী? চলতি বছরের অগাস্টে সংসদের ওয়াকফ সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। কিন্তু বিলের বিভিন্ন ধারা নিয়ে আপত্তি তোলে তৃণমূল-সহ বিরোধীরা। বিলটি এখন যৌথ সংসদীয় কমিটিতে।
এদিকে ২৫ নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে গিয়েছে সংসদের শীতকালীন অধিবেশন। ৮ ডিসেম্বর লোকসভা পেশ করা হবে ওয়াকফ সংশোধনী বিল।সঙ্গে যৌথ সংসদীয় কমিটির রিপোর্টও। সূত্রের খবর তেমনই।
কল্যাণ বলেন, 'ওয়াকফ কী? নিজের সম্পত্তি আল্লাহের কাছে সমপর্ণ করা। আমি যে মুহূর্তে সমপর্ণ করলাম, সেই সম্পত্তির মালিক আমি নই। সম্পত্তি মালিক হচ্ছে আল্লাহ। আইন একটা সিস্টেম তৈরি করে দিয়েছে, সেই সিস্টেমের মধ্যে এই আল্লার সম্পত্তিতে যাঁরা রয়েছেন, সে ওয়াকফ বোর্ড বলুন, ওয়াকফ কাউন্সিল বলুন, এবং সমস্ত ধর্মীয় মুসলিম তাঁরা দায়িত্ববদ্ধ আল্লার সম্পত্তি রক্ষা করতে। এই আল্লার সম্পত্তিকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে কেন? সেটা কি সংবিধান সম্মত নাকি সংবিধান বর্হিভূত'?
তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কথায়, 'ভারতের সংবিধান ১২৬ ধারা বলছে, ধর্মীয় আচরণের স্বাধীনতা। একজন মুসলিমের অধিকার রয়েছে। তাহলে সেই সম্পত্তিতে যদি আঘাত দেওয়া হয়, সেই চিন্তাভাবনা, সেই বিল ভারতীয় সংবিধানের ১২৬ নম্বর ধারাকে লঙ্খন করে। ভারতবর্ষের বুকে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিয়েছে সংবিধান। তাদের আঘাত করা যায় না। আমি হিন্দু হলেও আমার যদি মন্দির থাকে, আমার যদি জায়গা থাকে, আমার যদি ধর্মীয় আবেগ থাকে, সেই আবেগকে যেমন কেউ আঘাত দিতে পারে, তেমনি সংবিধান অনুযায়ী মুসলিম মানুষের ধর্মের আবেগকে নষ্ট করা যায় না'।