সংবাদদাতা, কাটোয়া: কেতুগ্রামের শাঁখাইয়ে তিনটি হনুমানের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়। শনিবার বিকেলে হনুমানগুলিকে ছটফট করে মরতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জল দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। বাসিন্দারা বলেন, চোখের সামনে ছটফট করে তিনটি হনুমানকে একসঙ্গে মরতে দেখলাম। আরও বেশ কয়েকটি হনুমান অসুস্থ হয়ে পড়েছে। কাটোয়া বনদপ্তর বিশেষ টিম পাঠিয়ে মৃত হনুমানগুলির দেহ উদ্ধার করেছে। অন্য কোথাও মারা গিয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করতে এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কাটোয়া বনদপ্তরের রেঞ্জার শিবপ্রসাদ সিনহা বলেন, মৃত হনুমানগুলিকে উদ্ধার করতে টিম পাঠিয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন কেতুগ্রাম-২ ব্লকের শাঁখাই এলাকায় ভাগীরথীর তীরে খেলছিলেন এলাকার বেশকিছু যুবক। তাঁরাই আচমকা একের পর এক হনুমানকে গাছ থেকে মাটিতে পড়তে দেখেন। এরপরই এলাকার বাসিন্দারা সেখানে আসেন। একের পর এক হনুমান মরতে দেখেন তাঁরা। এলাকার বাসিন্দা ছোটন রায়, কর্ণ বালা বলেন, আমাদের ধারণা বিষক্রিয়ায় হনুমানগুলি মরতে পারে। কারণ ওই হনুমানগুলির মুখ দিয়ে সাদা ফ্যানা বের হচ্ছে। তাছাড়া ওই হনুমানগুলি পূর্ণবয়স্ক নয়। আশপাশের গাছে আরও কয়েকটি হনুমান ঝিমোচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ আরও জানান, এলাকায় এখন প্রচুর হনুমান রয়েছে। প্রতিদিন হনুমানের দলকে এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। তাছাড়া এখন জমিতে অনেকেই ফসল বাঁচানোর জন্য রাসায়নিক প্রয়োগ করেছেন। কোথাও হয়তো হনুমানের দল সেই রাসায়নিক মেশানো জল বা ফসল খেয়েছে। শাঁখাইয়ের বাসিন্দা সাগর মাঝি বলেন, তিনটি অল্পবয়সি হনুমানকে মরতে দেখে খুবই খারাপ লাগছে। এমনিতেই এখন হনুমানের খাবার কমে এসেছে। তার উপর একই জায়গায় একসঙ্গে এতগুলি হনুমানের বিষক্রিয়া হল কী করে বনদপ্তরের তদন্ত করা উচিত। মৃত হনুমানগুলির ময়নাতদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হোক।
কাটোয়া শহরের পানুহাটে একটি বাড়িতে কয়েকদিন আগেও একটা হনুমান অসুস্থ হয়ে মারা যায়। কাটোয়া বিজ্ঞানকেন্দ্রের সভাপতি দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, এটা খুবই উদ্বেগজনক। পরিবেশে বাস্তুতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর। মানুষকে আরও সচেতন হতে হবে।