লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলে রাসমেলায় আলোমতি, স্নেহলতারা
বর্তমান | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: ব্যাঙ্ক থেকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলে আট মাসের নাতি, মেয়ে, জামাইয়ের সঙ্গে মেলায় এসেছেন মাঘপালার বাসিন্দা আলোমতি দাস। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে তুলে এনেছেন ১২০০ টাকা। নাতি বিবেককে কিনে দেবেন শীতবস্ত্র, খেলনা। নিজের টাকা। নিজের ইচ্ছে মতো খরচ করবেন। নিশিগঞ্জের বাসিন্দা পেশায় ফল বিক্রেতা অর্জুন বর্মনের সঙ্গে মেয়ে অনিতা বর্মনের বিয়ে হয়েছে। সেই মেয়ের ঘরের নাতিকে তার প্রথম রাসমেলায় স্বাধীনভাবে কিছু সামগ্রী কিনে দিতে পেরে তিনি খুশি।
ডাউয়াগুড়ির স্নেহলতা চক্রবর্তী তাঁর বৃদ্ধ স্বামীর সঙ্গে রাসমেলার শেষ দিন এসেছেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে তুলেছেন ১০০০ টাকা। কিডনির সমস্যা রয়েছে। প্রতি মাসে ওষুধ কিনতে হয়। এমাসে ৫০০ টাকা দিয়ে ওষুধ কিনেছেন। বাকি ৫০০ টাকা নিয়ে রাসমেলায় এসেছেন। বাড়িতে ছোট ছোট তিন নাতনি রয়েছে। তাদের জন্য জিলিপি, ভুট্টা, বাদাম, খেলনা ইত্যাদি কিনবেন। মদনমোহন মন্দিরের সামনের রাস্তায় শনিবার বিকালে তিনি বলেন, আগে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে ৫০০ টাকা পেতাম। এখন হাজার টাকা পাই। দিন কয়েক আগেই লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের টাকা তুলেছি। সেই টাকার কিছুটা ওষুধ কিনতে খরচ হয়েছে। বাকি ৫০০ টাকা দিয়ে রাসমেলা থেকে নাতনিদের জন্য কিছু জিনিস কিনব।
এদিন সকাল থেকেই রাসমেলায় ভিড় ছিল। দিন যত গড়িয়েছে ভিড় ততই বেড়েছে। সন্ধ্যা নামতেই সেই ভিড় ব্যাপক আকার নিয়েছে। এর মধ্যে ছিলেন লক্ষ লক্ষ মহিলা। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁরা এসেছেন। অনেকেরই আগে রাসমেলায় এলে সঙ্গের পুরুষ মানুষটির উপর খরচের বিষয়ে পুরোপুরি নির্ভর করতে হতো। এখন রাজ্য সরকার লক্ষ্মীর ভাণ্ডার চালু করেছে। মহিলাদের হাতে কিছু টাকা রয়েছে। সেই টাকার একটা অংশ মেলায় প্রিয়জনের জন্য খরচ করছেন অনেকেই। এই স্বাধীনতার স্বাদই আলাদা!