• চায়ে কতটা কীটনাশক, এবার জানা যাবে ৫০০ টাকার কিটেই
    বর্তমান | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: চা পাতায় কতটা কীটনাশক? এবার তা মুহূর্তে জানা যাবে ৫০০ টাকার কিটেই। শনিবার, চলতি মরশুমের শেষ দিনে লাটাগুড়িতে ডুয়ার্স চায়ের দেড়শো বছর পূর্তির অনুষ্ঠানে আত্মপ্রকাশ করল ওই বিশেষ কিট। চায়ে কীটনাশকের মাত্রা পরিমাপের জন্য দিল্লির একটি সংস্থা তৈরি করেছে ওই কিট। সংস্থার তরফে রোতিক কোহলির দাবি, কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে ইতিমধ্যেই মউ চুক্তি হয়েছে। এদিন ওই কিট আত্মপ্রকাশ করল। জানুয়ারির মধ্যে বাজারে মিলবে। বাগান থেকে তোলা কাঁচা চা পাতায় কতটা কীটনাশক রয়েছে, তা এই ৫০০ টাকার কিটের সাহায্যে মুহূর্তে জানা যাবে। 


    এ ধরনের কিট বাজারে এলে ক্ষুদ্র চা চাষিদের যেমন সুবিধা হবে, তেমনই বটলিফ ফ্যাক্টরি মালিকদেরও অনেকটাই উপকার হবে বলে মনে করেন জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী। কেন্দ্রীয় সরকারের ফরমানে চা শিল্পে ধাক্কা নিয়ে তাঁর বক্তব্য, এবার এমনিতেই ডুয়ার্সে ২২ শতাংশ চায়ের উৎপাদন কম। তার উপর কেন্দ্রের নির্দেশে প্রায় তিন সপ্তাহ আগে মরশুম শেষ করে দিতে বাধ্য হওয়ায় আর্থিক ক্ষতি সামলানো মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে কিছু বাগান বন্ধ হয়ে যেতে পারে।


    চায়ে কীটনাশক নিয়ে অভিযোগ বহুদিনের। বিশেষ করে ডুয়ার্সের চায়ে মাত্রাতিরিক্ত হারে কীটনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ফলে এখানকার চা বিদেশে রপ্তানির ছাড়পত্র পাচ্ছে না। সম্প্রতি টি বোর্ডের তরফে বেশ কিছু বাগানের চায়ের নমুনা সংগ্রহ করে তা ল্যাবে পরীক্ষা করে টি বোর্ড। ক্ষুদ্র বাগান মালিকদের বক্তব্য, ল্যাবে পরীক্ষা করাতে গেলে অনেক বেশি টাকা লাগে। তাছাড়া সময়ও লাগে অনেকটা। কিন্তু এই কিটে কাঁচা চা পাতা দেওয়ামাত্র তা বলে দেবে, ওই পাতায় কতটা কীটনাশক রয়েছে। এটি আসলে র‌্যাপিড কিট হিসেবে ব্যবহৃত হবে।


    ১৮৭৪ সালে জে আর হাউটন সাহেব গজলডোবায় চা বাগান পত্তন করেন। সেটিই ডুয়ার্সের প্রথম চা বাগান। এদিন ডুয়ার্স চায়ের দেড়শো বছরের অনুষ্ঠানে অবশ্য ডুয়ার্স চা আজও নিজস্ব পরিচিতি না পাওয়ায় আক্ষেপের সুর শোনা যায় বাগান মালিকদের গলায়। দেশের বড় বড় চা রপ্তানিকারকদের কাছে তাঁরা আবেদন জানান, অসম চায়ের ফিলার হিসেবে নয়, ডুয়ার্স চা যাতে ব্র্যান্ড নামে বিশ্ববাজারে পরিচিতি পায়, তার ব্যবস্থা করা হোক। কীটনাশকমুক্ত চা উৎপাদন করে ডুয়ার্স চা অচিরেই নিজের পরিচিতি পাবে বলে আশাপ্রকাশ করেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শমা পারভীন। উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত টি বোর্ডের ডেপুটি ডিরেক্টর সুবীর হাজরা বলেন, টি বোর্ডের তরফে তরাই-ডুয়ার্সের চায়ের জন্য লোগো দেওয়া হয়েছে। গত দেড়শো বছরের ইতিহাসে ডুয়ার্স চায়ের অনেক উত্থানপতন হয়েছে। এখন সামনে এগিয়ে যাওয়ার সময়। ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির জেলা সম্পাদক বলেন, এদিনের কনক্লেভে যে বক্তব্য উঠে আসবে, তা রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে জানানো হবে। 


    (ডুয়ার্স চায়ের ১৫০ বছর উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান। - নিজস্ব চিত্র।)
  • Link to this news (বর্তমান)