নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: পাহাড়ি পথ। দুর্গম সরু রাস্তার একদিকে পাহাড়, অন্যদিকে তিস্তা নদী। রাস্তায় সামান্য বাঁক। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেখান থেকেই ছিটকে বার কয়েক পাল্টি খেয়ে ১৫০ ফুট নীচে আছড়ে পড়ল যাত্রীবাহী বাস। শনিবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে সিকিমের লাইফ লাইন ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের আন্ধেরীতে। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এক মহিলা সহ ছ’জনের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন ১৫ জন। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন শিলিগুড়ি ও কলকাতার বাসিন্দারা। জখমদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাস্থলে ঘাঁটি গেড়ে উদ্ধার কাজ তদারকি করছেন কালিম্পংয়ের পুলিস সুপার শ্রীহরি পাণ্ডে। পুলিস জানিয়েছে, মৃতরা হলেন কলকাতার বেলগাছিয়ার ইকবাল হোসেন, গ্যাংটকের গোপাল জে প্রসাদ, গোরুবাথানের অজয় তামাং, সিকিমের জুলু কুমারী ওরফে জুহি, শিলিগুড়ির সেভক রোডের ইন্দ্রজিৎ সিং। একজনের পরিচয় এখনও জানা যায়নি।
কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালা সুহ্মমণ্যিম টি বলেন, শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা চলছে গুরুতর আহতদের। দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি। প্রশাসন সূত্রে খবর, সংশ্লিষ্ট বাসে যাত্রী ছিলেন ২২-২৩ জন। তবে তাঁদের মধ্যে কোনও পর্যটক আছেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। জেলাশাসক আরও বলেন, ওই বাসের যাত্রীদের কেউ নিত্যযাত্রী, আবার কেউ পেশাগত কিংবা ব্যক্তিগত কারণে সিকিম যাচ্ছিলেন। সংশ্লিষ্ট বাসে কোনও পর্যটক ছিলেন কি না, জানার চেষ্টা চলছে।
দুপুরে শিলিগুড়ি থেকে যাত্রী নিয়ে সিকিমের গ্যাংটকের উদ্দেশে রওনা হয় বাসটি। সিকিম সীমানা সংলগ্ন কালিম্পং জেলার রংপো থানার আন্ধেরীতে আচমকা সেটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রের খবর, রাস্তাটি সরু হলেও তেমন যানজট ছিল না। বিকেল ৩টা নাগাদ আন্ধেরীতে বাঁক অতিক্রম করার সময় আচমকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গভীর খাদে পড়ে যায়। শূন্যে কয়েকবার পাল্টি খেয়ে পাহাড়ের গা বেয়ে গড়িয়ে পড়ে তিস্তার পাড়ে। সঙ্গে সঙ্গে উদ্ধার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন স্থানীয়রা। খবর পেয়েই জেলা পুলিস, প্রশাসন, দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
কালিম্পংয়ের পুলিস ও প্রশাসন জানিয়েছে, মৃত ও জখম যাত্রীদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পরে মৃতদেহগুলি গ্যাংটকে পাঠানো হয়। আজ,
রবিবার সেখানেই ময়নাতদন্তের পর দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হবে। ঘটনার পর রাত পর্যন্ত সিকিমগামী সংশ্লিষ্ট রাস্তায় ব্যাপক যানজট ছিল। পুলিস কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয়।