নেশা মুক্তি কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন যুবকের মৃত্যু, ভাঙচুর-উত্তেজনা
বর্তমান | ০১ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, বারুইপুর: নেশা মুক্তি ও মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল। মৃতের নাম সৌরভ মণ্ডল (২৮)। এর জেরে ওই কেন্দ্রে ভাঙচুর চালাল মৃতের পরিবারের লোকজন। ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার রাতে বারুইপুরের সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল সংলগ্ন ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় বারুইপুর থানার পুলিস এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থলে আসেন স্থানীয় কাউন্সিলার অর্চনা মল্লিক। এলাকার বাসিন্দারা পুলিসের কাছে ওই চিকিৎসা কেন্দ্রটি বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানান। এই ঘটনার পর পুলিস ওই কেন্দ্রে থাকা ২৪ জন রোগীকে অন্যত্র সরিয়ে দিয়েছে। তবে এই ঘটনায় মৃতের পরিবারের তরফে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। পুলিস ভাঙচুরের ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বারুইপুরের সাউথ গড়িয়া পঞ্চায়েতের জগন্নাথপুরের বাসিন্দা ছিলেন সৌরভ মণ্ডল। গত শুক্রবার শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁকে দুপুরের দিকে বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ তিনি মারা যান। এই খবর তাঁর বাড়িতে পৌঁছলে পরিবারের সদস্যরা ওই কেন্দ্রে এসে উত্তেজনা ছড়ান। কেন মারা গেল সৌরভ, এই প্রশ্ন তুলে ভাঙচুর চালানো হয় বলে অভিযোগ। পরিবারের সদস্যরা এরপর হাসপাতালে গিয়ে তড়িঘড়ি দেহ নিয়ে বাড়ি চলে যান। তাঁদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। মৃতের ভাই শৌভিক মণ্ডল বলেন, ‘দাদা নেশাগ্রস্ত ছিল বলেই ওই কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছিল। ওই নেশা মুক্তি কেন্দ্র দাদার চিকিৎসার জন্য টাকা নিয়েছিল। মাত্র ৫০ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। কয়েকদিন আগে দাদার টিবি হয়েছে শুনে পরিবারের সদস্যরা ওই কেন্দ্রে গেলে ওরা ছাড়তে চায়নি। উল্টে টাকা দেওয়া হয়নি বলে দাদাকে দেখতে পর্যন্ত দেয়নি। প্রায় মারধর করত বলে অভিযোগ। এই কারণেই ওর মৃত্যু হয়েছে। আমরা ওই নেশা মুক্তি কেন্দ্র ভাঙচুর করিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা উত্তেজনার বশে করেছেন।’
কাউন্সিলার অর্চনা মল্লিক বলেন, ১০ বছর ধরে ভাড়া বাড়িতে ওই কেন্দ্র চলছিল। শুনেছি, রাতের দিকে ওই চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগীদের মারধর করা হতো। রোগীরা চিৎকার করলে পাড়ার লোকজন পর্যন্ত শুনতে পেতেন। এই ব্যাপারে বাড়ির মালিককে বারংবার বলা হলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। এদিকে, ওই কেন্দ্রের প্রতিনিধি অভিষেক দাস বলেন, হাসপাতালে ভর্তি করেছিলাম আমরাই। অসুস্থতার কারণে রোগী মারা গিয়েছে। আমরা রোগীদের মারধর করিনি।