বরুণ সেনগুপ্ত: বাংলাদেশের ঘটে চলা সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘু হিন্দুরা যথেষ্টই আক্রান্ত। প্রতিদিন খবরের শিরোনামে উঠে আসছে বাংলাদেশের ঘটে চলা মর্মান্তিক ঘটনা। এবার সেই বাংলাদেশের বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে আক্রান্ত বেলঘড়িয়া যুবক সায়ন ঘোষ। বেলঘড়িয়া ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের দেশপ্রিয় নগর এলাকায় সোনার বাংলা বছর বাইশের সায়ন ঘোষ ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশের ঢাকায় বন্ধুর বাড়িতে যায় সে। ২৬ তারিখে ফেরত আসার কথা। কিন্তু ফেরত আসার আগের দিনেই তার সঙ্গে ঘটে মর্মান্তিক ঘটনা।
জানা গিয়েছে, ঢাকা শহরে বন্ধুর সঙ্গে বাজার করতে গেলে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী মুসলমান সম্প্রদায়ের কিছুজন ভারতীয় হিন্দু জেনে সায়নের ওপর হামলা চালায়। মোবাইল টাকা কেড়ে নিয়ে ছুরি দিয়ে ইট পাথর দিয়ে আঘাত করা হয় সায়নের উপর। এরপরই গুরুতর জখম অবস্থায় সায়ন কোনওমতে ডাক্তার দেখিয়ে বন্ধুর বাড়িতে আসে। সায়ন এবং তাঁর বন্ধু পুলিসের কাছে গেলেও বাংলাদেশের পুলিস কোনও সাহায্যই তাদের করেনি বলেই তারা জানায়। এরপরে বাংলাদেশের মুসলিমরা ভয় দেখায় কোথাও বেশি জানাজানি হলে বা অভিযোগ দায়ের হলে তাদেরকে প্রাণে মেরে ফেলা হবে। এরপরেই আতঙ্কে ভয়ে পালিয়ে এসে অনেক কষ্ট করে গেদে সীমান্ত থেকে চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। বাড়ি ফিরেছে কেটে গিয়েছে কয়েক ঘন্টা। কিন্তু তার চোখে মুখে এখনও আতঙ্কের ছাপ।
চোখের সামনে সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচার দেখে আতঙ্কে রাতে ঘুম উড়ে গিয়েছে বছর বাইশের সায়নের। এখন সে আতঙ্কে আছে সে তো ফিরে এসেছে কিন্তু তার বন্ধু এবং তার পরিবারের উপর কোনও প্রকার যাতে হামলা না হয়। বাড়ি ফেরার পরে বেলঘড়িয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে সায়ন। এবং আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার কলকাতায় থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশনেও সমস্ত রকম অভিযোগ দায়ের করবে সায়ন এবং তার পরিবার। এছাড়াও ফেরার সময় গেদে সীমান্তে কাস্টমস অফিসেও সমস্ত রকম অভিযোগ দায়ের করেছে সায়ন। এত বড় ঘটনার পর আর কোনওদিন বাংলাদেশে যাবে না এমনই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।
উল্লেখ্য, প্রাণ হাতে করেই বাংলাদেশে যাওয়া ভারতীয় নাগরিকরা যেমন ফিরছেন দেশে পাশাপাশি, বহু হিন্দুরাও বাংলাদেশ থেকে অত্যাচারিত ও নিপীড়িত হয়ে, প্রাণ বাঁচাতে কিছুদিনের জন্য হলেও আশ্রয় নিতে বেছে নিচ্ছেন প্রতিবেশী দেশ ভারতকেই। সংখ্যালঘুদের বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্য থেকে অতি প্রয়োজনীয় ওষুধদের ক্ষেত্রেও চরম সমস্যা সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলেই জানালেন ভারতে পা রাখা যাত্রীরা।