শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: আবাস যোজনায় ‘দুর্নীতি’র বলি ব্যক্তি। তালিকায় নাম তুলে দেওয়ার আশ্বাসে প্রথমে আর্থিক প্রতারণা, তার পর সেই টাকা ফেরত চাইতেই ব্যক্তিকে পিটিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। মুর্শিদাবাদের রঘুনাথপুরের ঘটনায় উত্তেজনা এলাকায়। প্রতিবাদে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রামবাসীর। তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম আতিউর শেখ ওরফে কালু। তিনি রঘুনাথগঞ্জের মুকুন্দরপুর এলাকার বাসিন্দা। অভিযোগ, ২০১৮ সালের আবাস যোজনার সমীক্ষার সময় স্থানীয় তৃণমূল নেতা আবদুল লতিফ ওরফে মিঠুন তালিকায় নাম তুলে দেওয়ার নামে পাঁচ হাজার টাকা নেন। এদিকে, নতুন সমীক্ষার পর তালিকায় নাম না থাকায় শনিবার রাতে টাকা ফেরত চাইতে যান কালু। অভিযোগ, বচসার সময় ওই ব্যক্তি কালুকে মারধর করেন। আঘাতে কান থেকে রক্তপাত শুরু হয় তাঁর। আক্রান্তকে জঙ্গিপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে স্থানান্তর করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে আতিউরকে কলকাতার এনআরএস হাসপাতালে রেফার করেন চিকিৎসকরা। রবিবার সেখানেই মৃত্যু হয় কালুর।
মৃতের বউদির দাবি, “আবাসের ঘরের জন্য টাকা নিয়েছিলেন তৃণমূলের মিঠুন। তালিকায় নাম না থাকায় সেই টাকাই ফেরত আনতে যান কালু। সেই সময় তাঁকে মারধর করেন তিনি।” আতিউরের মৃত্যুর খবর পৌঁছতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস, সিপিএম ও গ্রামবাসী। স্থানীয় এক বাসিন্দার দাবি, “গতবারের সমীক্ষার সময় তৃণমূলের প্রাক্তন নেতৃত্ব বাসিন্দার থেকে টাকা নিয়েছেন। কিন্তু অনেকেরই নাম আসেনি। উলটে নেতার আত্মীয়দের নাম রয়েছে। আমরা কিছু বলতে গেলে ভয় দেখানো হচ্ছে। মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত করে দোষীদের শাস্তি দেওয়া হোক।”
প্রদেশ কংগ্রেসের সদস্য রেশমি বিবি বলেন, “আবাস যোজনার তালিকায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। তৃণমূলের প্রত্যেক নেতার আত্মীয়দের নাম রয়েছে। সাধারণ মানুষের নাম থাকলেও তা টাকা বিনিময়ে তোলা হয়েছে। এই মৃত্যুর ঘটনায় গ্রামের তৃণমূল নেতৃত্ব ও গুন্ডাবাহিনী রয়েছে। দোষীকে গ্রেপ্তার করা না পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।” যদিও ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল যোগ অস্বীকার করেছেন স্থানীয় তৃণমূল পঞ্চায়েতের সদস্য সেতাবুল ইসলাম। তাঁর কথায়, “ঘটনাটি ঘটেছে এটা সত্যি। তবে যিনি এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত, তিনি তৃণমূলের কেউ নন।”