ঝাড়গ্রামের রবীন্দ্রপার্কে লালমাটির হাটকে কেন্দ্র করে মেলার উদ্বোধন
বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্ৰাম শহরের স্বউদ্যোগী একদল মহিলার হাত ধরে লালমাটির হাট শুরু হয়েছিল। রবিবার শহরের রবীন্দ্রপার্কে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল। স্বউদ্যোগী মহিলাদের এই মেলা ইতিমধ্যেই সাড়া ফেলেছে। মেলায় নিজেদের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করে সুমনা দাস, স্বাগতা দত্ত, অঞ্জনা ঢোলরা স্বনির্ভর হওয়ার দিশা দেখাচ্ছেন।
চার বছর আগে বোলপুরের সোনাঝুরি হাটের আদলে লালমাটির হাট শুরু হয়েছিল। এদিন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা, জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল, জেলা সভাধিপতি চিন্ময়ী মারান্ডী উপস্থিত ছিলেন। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্যে দিয়ে মেলার সূচনা হয়। পয়লা ডিসেম্বর থেকে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই মেলা চলবে। সপ্তাহের প্রতি রবিবার রবীন্দ্র পার্কে মেলা বসবে।
পার্কের ভিতর ছড়িয়ে ছিটিয়ে হাট বসেছে। হাটে শাড়ি, কুর্তি, শীতবস্ত্র, চাদর, ঘর সাজানোর জিনিস পাওয়া যাবে। এছাড়াও প্রসাধনী দ্রব্য, কেক বানানোর সামগ্রী, নানা রকমের গয়না, ব্যাগ, মাটির জলের জগ, বাবুইঘাস দিয়ে তৈরি জিনিসপত্র পাওয়া যাচ্ছে। খাদ্যরসিকদের জন্য রয়েছে হাতে তৈরি নানা ধরনের পিঠেপুলি, পাটি সাপটা, নারকেল পীঠে, রান্না করা হাঁসের মাংস।
লালমাটির হাটের অন্যতম সদস্য দেবীপ্রধান বসু বলেন, চার বছর আগে গুটিকয়েক স্বউদ্যোগী মহিলাকে নিয়ে এই মেলার সূচনা হয়েছিল। আমাদের বড় প্লাটফর্ম দরকার ছিল। মেলা হলে বহু মানুষ আসবেন। পরিচিতি বাড়লে ব্যবসাও বাড়বে। শীতের সময় জেলায় বহু পর্যটক এখানে আসেন। তাঁদেরও আকর্ষণ করা আমাদের লক্ষ্য ছিল। ধীরে ধীরে এই হাটেরও পরিচিতি বাড়ছে। সুমনা দাস বলেন, স্বাধীনভাবে কিছু করতে চেয়েছিলাম। বাবুইঘাস দিয়ে ঘর সাজানোর নানা জিনিসপত্র তৈরি করতে শুরু করি। ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়লে গ্ৰামীণ মহিলাদেরও এই কাজে যুক্ত করেছি। ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসা পর্যটকরাও এখানে ভিড় জমান।
স্বাগতা দত্ত বলেন, মেলায় মেয়েদের চুলে বাঁধা বিভিন্ন ধরনের ক্লিপ, গয়না, ব্যাগের পসরা বসিয়েছি। স্বাধীনভাবে ব্যবসা করতে পেরে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। অঞ্জনা ঢোল বলেন, মূলত বুটিকের জিনিসপত্র বিক্রি করি। স্বাধীনভাবে ব্যাবসা করার মধ্যে আনন্দ আছে। আমার স্বামী কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন। এখন তিনি এই ব্যবসায় সাহায্য করছেন। মেলায় বহু মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়। পরে তাঁরা অর্ডার দিয়ে জিনিসপত্র নেন। শতাব্দী বাগুলি বলেন, প্রথমে নবদ্বীপের ক্ষীরদই এনে বাড়িতে বিক্রি করতাম। ঘিও তৈরি করি। এই মেলায় যোগ দিয়ে দেখি ভালোই চাহিদা আছে। এবছর হাটে ভালোই বিক্রি হবে বলে আশা করছি।
জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, স্বউদ্যোগী মহিলারা ব্যবসা বাড়ানোর লক্ষ্যে নিজেরাই মেলা বসাচ্ছেন। নিঃসন্দেহে এটি প্রশংসাজনক। এই উদ্যোগকে অন্য মহিলাদেরও স্বনির্ভর হওয়ার প্রেরণা দেবে।