শান্তিনিকেতনের কলাভবনে শুরু নন্দনমেলা, প্রথম দিনেই ভিড়
বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, বোলপুর: পৌষমেলার আয়োজনের আবহে রবিবার থেকে শান্তিনিকেতনের কলাভবনে শুরু হল ৫১তম নন্দনমেলা। কলাভবনের প্রাণপুরুষ আচার্য নন্দলাল বসুর জন্মদিন উপলক্ষ্যে দুই দিনব্যাপী নন্দন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেজন্য ভবন প্রাঙ্গণকে বিভিন্ন শিল্পকর্ম ও স্থাপত্য প্রদর্শনীর মাধ্যমে সাজানো হয়েছে। প্রথম দিনেই শিল্প অনুরাগী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের পড়ুয়াদের ভিড় উপচে পড়ে। পড়ুয়াদের উন্মাদনাও ছিল। ক্যাম্পাসের চারিদিকে কার্যত সাজ সাজ রব। দু’সপ্তাহ ধরে পড়ুয়া, অধ্যাপক ও কর্মীরা ব্যস্ত ছিলেন বিভিন্ন শিল্পকলা তৈরির কাজে। নাওয়া-খাওয়া ভুলে সৃষ্টি সুখের উল্লাসে মগ্ন থাকার পর এদিন নন্দনমেলার আনন্দে সকলে মেতে উঠেছিলেন।
বিশ্বভারতীর সূচনাকালে রবীন্দ্রনাথ যে ক’জন দিকপালকে পাশে পেয়েছিলেন তারমধ্যে আচার্য নন্দলাল বসু ছিলেন অন্যতম। যিনি কলাভবনে ‘মাস্টার মশাই’ বলে অধিক পরিচিত ছিলেন। কলাভবনের গঠনকালে তাঁর ভূমিকা ছিল অবিস্মরণীয়। ১৯২৩ সালে তিনি কলাভবনের অধ্যক্ষ পদে বসেন। রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্যে কল্পনার জগত থেকে বাস্তবের মাটিতে পা রাখার পর বীরভূমের রুক্ষমাটির প্রকৃতি অনুভব করেছিলেন। সেই অনুভবকেই পড়ুয়াদের মধ্যে উজাড় করেছিলেন মাস্টারমশাই। ১৯৬৬ সালে তিনি প্রয়াত হন। এস্থেটিকস্ বা নন্দনতত্ত্ব থেকেই নন্দনমেলার নামকরণ। তবে নন্দলালের জন্মদিন ৩ ডিসেম্বর। তাঁর অবদানকে স্মরণ করে জন্মদিনের দু’দিন আগে ১ ও ২ ডিসেম্বর নন্দনমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় কলাভবন। এরপর ৩ ডিসেম্বর চিরাচরিত প্রথা মেনে যথাচিত মর্যাদায় মাস্টারমশাইকে স্মরণ করে ভবন কর্তৃপক্ষ।
কী পাওয়া যায় এই মেলায়? বলা ভালো, কী পাওয়া যায় না। শিল্পকর্ম থেকে শুরু করে ভারতবর্ষের নানা প্রান্তের রান্নার রকমারি পদ, এছাড়া ক্যাম্পাসজুড়ে ছাত্রছাত্রীদের শিল্পকর্মের নমুনা। সব মিলিয়ে শিল্প সৃষ্টির জমজমাট পরিবেশ। বিকিকিনির ফাঁকে কলাভবনের কঙ্কনা কোলে, স্মৃতি প্রামাণিক, বিশাখা চক্রবর্তী বলেন, বিশ্বভারতীতে সারাবছর নানান ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান হলেও আমরা নন্দনমেলার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করি। ক্যাম্পাসকে বিভিন্ন আউটডোর স্কাল্পচার দিয়ে সাজানো হয়েছে। এছাড়াও শিল্প সামগ্রী বিক্রির জন্য দোকানপাট বসেছে। প্রথম দিনে ভিড় দেখে আমরা আনন্দিত। আশা করি দর্শনার্থীরা সবকিছুই উপভোগ করবেন। -নিজস্ব চিত্র