মামাভাগ্নে পাহাড়ের পাহাড়েশ্বর পার্কে দীর্ঘদিন বন্ধ টয়ট্রেন, হতাশ পর্যটকরা
বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, সাঁইথিয়া: ইচ্ছে থাকলেও অনেকেরই দার্জিলিং গিয়ে টয়ট্রেনে চাপা সম্ভব হয় না। দুবরাজপুরের পাহাড়েশ্বর পার্কে সেই সুযোগ থাকলেও পর্যটকরা এই আনন্দ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মামা ভাগ্নে পাহাড়ের পাহাড়েশ্বর পার্কে দীর্ঘদিন ধরে টয়ট্রেন অকেজো থাকায় পর্যটনের মরশুমে হতাশ হয়ে ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন পর্যটকরা।
বীরভূম জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলির মধ্যে অন্যতম দুবরাজপুরের মামা ভাগ্নে পাহাড়। এই জেলার পাশাপাশি ভিনজেলা থেকেও বহু পর্যটক এখানে ভিড় জমান। শীত পড়তেই অনেকে আসা শুরু করেছেন। কয়েকদিন পরই শুরু হবে পিকনিকের মরশুম। তখন অসংখ্য পর্যটক ভিড় জমাবেন মামা ভাগ্নে পাহাড়ে। সেইমতো পাহাড়ে ঘুরতে আসা পর্যটকদের বিনোদনের জন্য প্রায় সাত বছর আগে পাহাড়েশ্বরে পার্ক তৈরির উদ্যোগ নেই দুবরাজপুর পুরসভা। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৬নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে পাহাড়েশ্বর পার্ক। সাংসদের এলাকা উন্নয়নের তহবিলের প্রায় ২১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে পার্কে টয়ট্রেন কেনা হয়েছিল। কিন্তু উদ্বোধনের পর সেটি চালু করা হলেও বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে মুখ থুবড়ে পড়ে। ২০২২ সাল নাগাদ ঠিক করা হলেও দু’বছরের মধ্যে ট্রেনটি আবার একই অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এবিষয়ে সাংসদ শতাব্দী রায় বলেন, আমি ছোট-বড় সকলের মনোরঞ্জনের জন্য সাংসদ তহবিল থেকে টয়ট্রেনটি দিয়েছিলাম। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পুরসভার। তহবিল উন্নয়নের টাকা প্রতি বছর দেওয়া সম্ভব হয় না। প্রথম থেকেই সামান্য রক্ষণাবেক্ষণ করলে ঠিক থাকত। কিন্তু তা করতে পারেনি পুরসভা। মামা ভাগ্নে পাহাড় সংলগ্ন এলাকায় কয়েক বছর আগে তৃণমূল পরিচালিত দুবরাজপুর পুরসভার উদ্যোগে পাহাড়েশ্বর পার্ক তৈরি হয়। পার্কের দোলনা, স্লিপারের পাশাপাশি সাংসদের উন্নয়ন তহবিলের অর্থে প্রথম টয়ট্রেনটি কেনা হয়। পর্যটকদের অভিযোগ, পার্কে ঢোকার সময় প্রবেশমূল্য ১০টাকা দিতে হয়। ট্রেনটিতে চাপার জন্য ২০টাকা দিতে হতো। কিন্তু তা সত্ত্বেও ঠিকমতো পরিষেবা মিলত না। পার্কের অন্যান্য জিনিস কোনওক্রমে রক্ষণাবেক্ষণ করা হলেও টয়ট্রেনের উপর কোনও নজরদারি হয়নি। তাদের দাবি, টয়ট্রেন বসানোর পর থেকে খুব কমদিন চলেছে। সেকারণে আজও বহু পর্যটক পাহাড়েশ্বর পার্ক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। পার্কে ঘুরতে আসা পর্যটক শুভাশিস সিনহা বলেন, এখানে মনোরঞ্জনের জন্য অনেক কিছুই রয়েছে। ঘুরতে আসার আগে টয়ট্রেনের কথা শুনেছিলাম। এসে দেখছি টয়ট্রেন রয়েছে, কিন্তু তা চলে না। হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। পুরসভার চেয়ারম্যান পীযূষ পাণ্ডে বলেন, ২০১৭ সাল নাগাদ পার্কে সাংসদ তহবিলের প্রায় ২১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ট্রেনটি কেনা হয়েছিল। কিন্তু কিছুদিন চলার পরে খারাপ হয়ে যায়। ২০২২সালে সংস্কার করে কয়েকদিন চালু করা হলেও দেখভালের অভাবে ট্রেনটি আবার খারাপ হয়ে পড়েছে। পুরসভার তরফ থেকে বারংবার ঠিক করা হলেও বেশকিছু পর্যটক ট্রেনে উঠে উপদ্রব করত। সেকারণেও অনেক সময় ট্রেনটি খারাপ হয়ে পড়েছে। আপাতত চালু করা যায়নি। তবে সাংসদের সঙ্গে কথা বলে ট্রেনটি পুনরায় চালুর চিন্তাভাবনা করব।