• কালনায় পড়ে শিল্পতালুক তৈরির জন্য অধিগ্রহণ করা জমি, ক্ষোভ
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, কালনা: কালনার সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতে চার দশক আগে শিল্পতালুকের জমি অধিগ্রহণ করা হলেও তা পড়েই রয়েছে। শিল্প গড়ে না ওঠায় ক্ষোভ তৈরি হয়েছে জমিদাতা থেকে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে। সরকার রাজ্যে শিল্প বাড়াতে একাধিক উদ্যোগ নিলেও এই জমি নিয়ে কিছু ভাবা হচ্ছে না। তাই ওই জায়গায় ফের শিল্প গড়ে তোলার দাবি তুলছেন স্থানীয়রা।


    স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কালনা-২ ব্লকের সাতগাছিয়া পঞ্চায়েতে রয়েছে বন্দেবাজ মৌজা। ১৯৮৮ সাল নাগাদ বাম আমলে এই মৌজার এসটিকেকে রোডের ধারে প্রায় ৯ একর জমি শিল্পতালুক গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে জেলা পরিষদ। বর্তমান জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যদের দাবি, বাম আমলে বাবা-কাকাদের সন্তানদের চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে জলের দরে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছিল। জমি অধিগ্রহণের কয়েক বছরের মধ্যে হাতে গোনা দু’-চারজন ক্ষুদ্রশিল্প উদ্যোগীদের মধ্যে কিছু জমি বণ্টন করা হয়। গড়ে ওঠে একটি প্লাস্টিক কারখানা, আটাকল ও পিজবোর্ড তৈরির কারখানা। সেই সময় অভিযোগ ওঠে, সিপিএমের নেতারা নিজেদের পছন্দের লোকেদের খুব কম টাকায় জমি বিলি বণ্টন করে। তবে, বেশিরভাগ জমি পড়ে থাকে। সত্যিকারের শিল্প উদ্যোগীদের জমি না দিয়ে দলের নেতাদের পছন্দসই লোকেদের জমি দেওয়ায় ফল হাতেনাতে মেলে। কয়েক বছরের মধ্যে আটাকল ও পিজবোর্ড তৈরির কারখানাটি বন্ধ হয়ে যায়। টিকে থাকে একমাত্র প্লাস্টিক কারখানা। অভিযোগ, এরপরও অনেক শিল্প উদ্যোগী শিল্প গড়ার জন্য জমি চেয়ে আবেদন করলেও সিপিএমের ক্ষমতাসীন জেলা পরিষদ কোনও সারা দেয়নি। তৃণমূল সরকার আসার পর জমি জরিপের কাজ হয়। আশায় বুক বেঁধেছিলেন জমিদাতা থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা। ভেবেছিলেন শিল্প গড়ে উঠলে এলাকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থান হবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনও শিল্প গড়ে ওঠেনি। বিঘের পর বিঘে জমি পড়ে রয়েছে। জমিদাতা পরিবারের কেউ চাকরি তো পাননি। উপরন্তু কোটি টাকার জমি কয়েক হাজার টাকায় বিক্রি করে আফসোস করছেন জমিদাতাদের পরিবারের সদস্যরা। আজ অধিগৃহীত জমি বেদখল হচ্ছে। জমিদাতা পরিবারের সদস্য আব্বাসউদ্দিন খাঁ বলেন, সিপিএম নেতারা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে জলের দরে জমি অধিগ্রহণ করে। জমির টাকা ঠিকমতো দেওয়া হয়নি। আজ সেই সব জমির দাম কোটি টাকা। আমরা চাই সরকার শিল্প গড়ে তুলুক। না হলে আমাদের জমি ফেরত দিক। 


    সাতগাছিয়া পঞ্চায়েত প্রধান হরেকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, এর আগে জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষে যতটুকু করার আমরা করেছি। জমি মাপজোক হয়েছে। শিল্পের সমাধানের ক্যাম্পাস সহ জেলাশাসকের দৃষ্টি আকর্ষণ করব। আমরা চাই এই জমিতে শিল্প গড়ে উঠলে এলাকার উন্নতি হবে। কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটবে। সিপিএমের কালনা-২ এরিয়া কমিটির সম্পাদক মহম্মদ শা বলেন, সেই সময় শিল্প করার জন্য আমরা জমি নিয়েছিলাম। কিন্তু আমরা কাজ শেষ করতে পারিনি। এই অভিযোগ ঠিক নয়। আমরা চাই ওই জমিতে শিল্প গড়ে উঠুক।
  • Link to this news (বর্তমান)