• রংপোয় বাস দুর্ঘটনায় মৃত বেড়ে ৭, ছেলেকে ‘কুংফু মাস্টার’ হিসেবে দেখা হল না বাবার
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি ও সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: কালিম্পংয়ের রংপোতে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল আরও এক জখমের। এনিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল সাত। শনিবার বিকেলে ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের রংপোর আন্ধেরীতে যাত্রীবাহী একটি বাস তিস্তার ১৫০ ফুট গভীর খাদে পড়ে যায়। 


    এতে সেদিনই ছ’জনের মৃত্যু হয় এবং ১৫ জন জখম হন। রবিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজনের মৃত্যু হয়। পুলিস জানিয়েছে, বিহারের কিষানগঞ্জের বাসিন্দা জমিরউদ্দিন আনসারির এদিন মৃত্যু হয়েছে। বাকি 


    মৃতদের মধ্যে চার জন পশ্চিমবঙ্গের ও দু’জন সিকিমের বাসিন্দা। দুর্ঘটনায় মৃতদের মধ্যে ইকবাল হাসান কলকাতার বেলগাছিয়ার, সুজিত দাস জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ার এবং ইন্দ্রজিৎ সিং শিলিগুড়ির সেভক রোডের বাসিন্দা।


    কালিম্পংয়ের জেলাশাসক বালাসুব্রহ্মণ্যম টি বলেন, ইকবাল হাসানের দেহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় কলকাতায় তাঁর বাড়ির উদ্দেশে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনায় এরাজ্যের মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ টাকা করে দেবে সরকার। এদিন ক্রেনের সাহায্যে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসটিকে খাদ থেকে তোলা হয়। কী কারণে বাসটি খাদে পড়ল, প্রশাসনের তরফে তা এখনও জানানো হয়নি। জেলাশাসকের নেতৃত্বে পুলিস ও প্রশাসনের একটি টিম এদিন দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, পিডব্লুডি (রোড), পরিবহণ দপ্তরের আধিকারিকরাও ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে। জেলাশাসক বলেন, যেখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার নীচেই কাজ হচ্ছিল। ওই রাস্তা দিয়ে দু’টি গাড়ি যাওয়া-আসার ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কী কারণে বাসটি খাদে পড়ল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, চালকের ভুলেই দুর্ঘটনা ঘটেছে। চালক সুস্থ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে বাসের ফিটনেস। গ্যাংটক হাসপাতালে ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহগুলি বাড়ি পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শিলিগুড়ির ইন্দ্রজিতের পরিবার মেঘালয় থেকে আসছে। তাঁর দেহ গ্যাংটকে রেখে দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসার পর এদিন দু’জনকে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্যাংটকের সিংতাম হাসপাতালে বাকিরা ভর্তি রয়েছেন।  


    এদিকে, ছেলেকে কুংফু মাস্টার হিসেবে দেখার স্বপ্ন পূরণ হল না জলপাইগুড়ির পান্ডাপাড়ার সুজিত দাসের। অভিশপ্ত ওই বাসে চেপে সিকিমে ঠিকা সংস্থার হয়ে বিদ্যুতের কাজে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন বছর পঞ্চাশের সুজিতবাবু। তাঁর ছেলে একাদশের ছাত্র বিশ্বজিৎ কুংফু প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ভূবনেশ্বরে গিয়েছিল। বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে প্রতিযোগিতার আসর ছেড়ে বাড়িতে ফিরছে সে। এদিকে, 


    দুর্ঘটনায় স্বামীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর থেকেই মূর্চ্ছা যাচ্ছেন স্ত্রী ঊষাদেবী। রবিবার পান্ডাপাড়া কালীবাড়ি এলাকায় মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে যান জলপাইগুড়ি সদরের বিডিও মিহির কর্মকার। তিনি প্রশাসনের তরফে পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
  • Link to this news (বর্তমান)