• পিএইচই’র জলে চাষবাস, অভিযান
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বালুরঘাট: জল অপচয় রোধে জোর প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসন, পরিবেশপ্রেমীরা। কিন্তু অবস্থা বদলাচ্ছে কই? শহর হোক বা গ্রাম, অপচয়ের ছবিটা সর্বত্রই কমবেশি এক। এরই মধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায় এবার প্রকাশ্যে এল সরকারের দেওয়া পানীয় জল চুরি করে চাষবাস সহ অন্য কাজে ব্যবহার করার ঘটনা।


    পানীয় জলের অপচয় বন্ধ করার জন্য অভিযানে নামতেই চোখ ছানাবড়া আধিকারিকদের।  বালুরঘাট ব্লকের চিঙ্গিসপুর, দোল্লা, তপন, গঙ্গারামপুর সহ একাধিক ব্লকে গিয়ে বিষয়টি নজরে এসেছে আধিকারিকদের। কোথাও পানীয় জল ব্যবহার হচ্ছে কৃষিকাজে, অনেক জায়গায় আবার পাইপ দিয়ে ট্যাঙ্কে সংরক্ষণ করে ব্যবহার হচ্ছে কাপড় কাচা, বাসন মাজা, স্নানের কাজে।


    এই অপচয় বন্ধ করতে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর (পিএইচই), পুলিস ও ব্লক প্রশাসন জেলাজুড়ে অভিযানে নেমেছে। গ্রামগঞ্জে গিয়ে পানীয় জল চুরি রুখে সতর্ক করছেন আধিকারিকরা। বেশকয়েকটি জায়গায় পাইপ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খুলে দেওয়া হয়েছে জলের ট্যাঙ্ক। লাগাতার এই অভিযান চালানো হবে। তারপরেও যদি অবস্থার পরিবর্তন না হয়, তাহলে আইনি পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।


    দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তরের আধিকারিক সুব্রত কর বলেন, জলের অপচয় রুখতে আমরা লাগাতার অভিযান চালাচ্ছি। অনেক জায়গায় দেখা গিয়েছে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা পানীয় জল চাষের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। পুকুরের মাছ চাষ সহ একাধিক কাজেও ব্যবহার করার ঘটনা সামনে এসেছে। প্রাথমিকভাবে আমরা সতর্ক করেছি। তাতেও আটকানো না গেলে আইনি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবো।


    জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ কৌশিক মাহাতোর কথায়, আমরা প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতের প্রধান, সদস্যদের নির্দেশ দিয়েছি যাতে বাড়ি বাড়ি সরবরাহ করা জলের অপচয় না হয় সেদিকে কড়া নজর রাখতে।


    জেলাজুড়ে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩ লক্ষ ৩৮ হাজার পরিবারকে পরিশ্রুত পানীয় জলের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে ১ লক্ষ ৭৩ হাজার পরিবার জল পেয়েছে। কোথাও দিনে তিনবার, কিছু জায়গায় দু’বার দু’ঘণ্টা করে বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জল সরবরাহ করা হয়। এই জল শুধুমাত্র পানীয় হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কিন্তু বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ পেয়ে অপব্যবহার শুরু করেছে অনেকে। 


    অভিযোগ উঠছে, গবাদি পশুপালন, হ্যাচারি এবং মাছচাষ সহ আরও অনেক ব্যবসায়ীক কাজে পানীয় জল ব্যবহার করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রশাসনের আধিকারিকরা পানীয় জল শুধুমাত্র খাবারের জন্যই ব্যবহার নিশ্চিত করতে চাইছেন। তপনের এক চাষি বললেন, অনেক সময় জল কিনে চাষ করতে হয়। খরচ বাঁচাতে অনেকে পানীয় জল জমিতে ব্যবহার করছেন। সব দেখেও চুপ করে থাকতে হয়। কারণ স্থানীয়স্তরে প্রশাসন ব্যবস্থা না দিলে এই অনিয়ম একেবারে বন্ধ করা সম্ভব নয়। তাছাড়া অনেক প্রভাবশালীও ব্যবসায়ীক কাজে সরকারি জল ব্যবহারের কাজে মদত দিয়ে থাকেন।  নিজস্ব চিত্র।
  • Link to this news (বর্তমান)