দুই বিধবার বাড়িতে ২০বার হাতির হানা, সরকারি ঘর না পাওয়ায় প্রশ্ন
বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার: মাদারিহাট ব্লকের দক্ষিণ খয়েরবাড়ি গ্রাম। জলদাপাড়ার ধুমচি জঙ্গল ঘেঁষা গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি দুই বিধবা প্রৌঢ়া ফুলমণি ও চেপ্টি শৈবর। চেপ্টি নিঃসন্তান। ফুলমণির এক ছেলে। দু’জনেরই বেড়ার ঘর। এরমধ্যে চেপ্টির ঘর ২০বার ভেঙে দিয়েছে হাতি। ফুলমণির ঘর ভেঙেছে ২২বার। গত পাঁচ বছরে হাতি দুই প্রৌঢ়ার ঘরে এই হামলা চালিয়েছে। বারবার একই বাড়িতেই হাতির হানা হওয়ায় চিন্তিত বনদপ্তরও।
হাতির হানায় ভয়ে বিকাল পাঁচটায় রান্না ও খাওয়া শেষ করে রাতে তাঁরা ঘুমোতে যান পাশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঘরে। ফুলমণি ছেলে ও বউমাকেও সঙ্গে নিয়ে যান। এভাবেই চলছে তাঁদের জীবন। অথচ দুই বিধবার সরকারি ঘর জোটেনি।
চেপ্টি শৈব বলেন, আমরা বুঝতে পারছি না, কেন বারবার আমাদের বাড়িতেই হাতি ভাঙচুর চালায়। হাতিকে পুজো করেছি। তারপরও বাড়িতে হাতির হামলা বন্ধ হয়নি। ভোট আসে ভোট যায় তারপরেও আমাদের সরকারিভাবে ঘর জোটেনি। একই কথা বলেন ফুলমণিও। তিনি বলেন, কেন যে বারবার ‘মহাকাল বাবা’ আমাদের ঘরেই ভাঙচুর চালায় তা আজও বুঝতে পারি না।
দুই বিধবার বাড়ি থেকে জলদাপাড়ার ধুমচির জঙ্গল ২০০মিটারের মধ্যে। রোজ রাতে দক্ষিণ খয়েরবাড়ি গ্রামে হাতি ঢোকে। হাতির আনাগোনায় রাত জেগে পাহারা দিতে হয় বাসিন্দাদের। কিন্তু তারই মধ্যে পাঁচ বছরে দুই প্রৌঢ়ার বাড়িতে একাধিকবার হাতি হামলা চালিয়েছে। হস্তিবিশারদ পার্বতী বড়ুয়া বলেন, অনেক সময় হাতিদের যাতায়াতের করিডরে বাড়ি থাকলে হাতিদের রোষ গিয়ে পড়ে সেই বাড়িতে। এই ঘটনাও তাই হতে পারে। স্থানীয় যুবক সুপেন দাস বলেন, আমাদের ধারণা, ওই বাড়ি দুটি হাতিদের যাতায়াতের করিডরের মধ্যে হতে পারে। তারজন্যই হয়তো বারবার হামলা হচ্ছে।
কিন্তু এই দশার পরও দুই বিধবা মহিলা কেন সরকারিভাবে ঘর পাননি? এই প্রশ্নে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য কিশোর মুণ্ডা বলেন, আমি বিষয়টি ওপর মহলে জানিয়েছি। কিন্তু তারপরও কোনও কাজ হয়নি। মাদারিহাটের নব নির্বাচিত বিধায়ক জয়প্রকাশ টোপ্পো বলেন, আমাকে দুই প্রৌঢ়ার ওই অসহায় অবস্থা এবং ঘর না পাওয়ার বিষয়টি কেউ জানায়নি। সোমবার বিধানসভায় বিধায়ক হিসাবে শপথ নিয়ে ফিরেই দক্ষিণ খয়েরবাড়িতে যাব। তারপরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখব। বেহাল বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে চেপ্টি শৈব। - নিজস্ব চিত্র।