নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: শীতের আগেই তুফানগঞ্জের রসিকবিলে আসতে শুরু করেছে পরিযায়ী পাখির দল। সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া প্রভৃতি জায়গা থেকে দলে দলে উড়ে আসছে এই পাখির দল। শীতের মরশুমে এখানেই থাকবে তারা। এদের কলকাকলিতে ভরে উঠতে শুরু করেছে রসিক বিলের বিস্তীর্ণ জলাশয়। পর্যটকদের কাছেও এই পাখির দল অত্যন্ত আকর্ষণীয়। প্রতি বছর হাজার হাজার পর্যটক, বিশেষ করে পাখিপ্রেমীদের কাছে এই জায়গা কার্যত স্বর্গরাজ্য।
এদিকে, রসিকবিলে গত এপ্রিলে দুই স্ত্রী চিতাবাঘ রিমঝিম ও গরিমা সন্তান প্রসব করে। জন্মের পর থেকে বেশ কিছুদিন তাদেরকে আলাদা রাখা হয়েছিল। এখন একটি এনক্লোজারে এক সঙ্গে তাদেরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই শাবকদের সঙ্গে কোনও পুরুষ চিতাবাঘ ছাড়া হয়নি। কিন্তু এত কিছুর পরেও একটি শাবক অসুস্থ হয়ে দিনকয়েক আগে মারা গিয়েছে। এটির মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে ভিসেরা টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। শীতের মরশুমে এই চিতাবাঘ ও পরিযায়ী পাখি দেখতে রসিকবিলে পর্যটকদের ভিড় উপচে পড়বে বলে আশা করছে বনদপ্তর।
বনদপ্তরের এডিএফও বিজনকুমার নাথ বলেন, রসিকবিলে পরিযায়ী পাখির দল আসতে শুরু করেছে। চিতাবাঘ শাবকদের তাদের মায়েদের সঙ্গে এক সঙ্গে রাখা হয়েছে। অসুস্থ হয়ে একটি শাবকের মৃত্যু হয়েছিল। মৃত শাবকের ভিসেরা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। আশা করছি এবারও শীতের মরশুমে এখানে প্রচুর পরিমাণে পর্যটকের ভিড় হবে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারেও রসিকবিলে কটন পিগমি রুজ, গ্রে হেডেড ল্যাপ ইউং, লেজার হুইসলিং ডাক, কর্মোরেন্ট, ওয়াটার হেন, মুর হেন, ফেরুজিনিয়াস পোচার্ড, কমন টিল সহ আরও অনেক প্রজাতির পরিযায়ী পাখি এখানে এসেছে। গত বছর এখানে সাড়ে ছয় হাজার পরিযায়ী পাখি এসেছিল। এবার তার চাইতে বেশি সংখ্যক পাখি আসবে বলে আশা করছে দপ্তর।
রসিকবিলে বিস্তীর্ণ এলাকায় জলাশয় রয়েছে। বিলের এলাকাও বৃদ্ধি পেয়েছে। পাখিদের উপর নজর রাখা হচ্ছে। এদিকে, এখানে জন্মানো চিতাবাঘ শাবকদের যত্ন সহকারেই বড় করা হচ্ছে। মায়ের দুধের পাশাপাশি এরা বেশ কিছুদিন হল মাংসও খাচ্ছে। এনক্লোজারে খেলে বেড়াচ্ছে। একসঙ্গে দুই মাকে রাখার পরেও কোনও গোলমাল হয়নি। কারণ রিমঝিম ও গরিমা আগে থেকেই একসঙ্গে থাকত। সন্তান প্রসবের পর এতদিন তাদের আলাদা রাখা হয়েছিল। দীর্ঘদিন পর তাদের একসঙ্গে আনায় ফের পুরনো সখ্যতায় দেখা গিয়েছে। শাবকরাও একসঙ্গে খুনসুঁটি করে সময় কাটাচ্ছে।