• ট্রেনেই খুন আরও দুই! জেরায় কবুল সেই সিরিয়াল কিলারের
    বর্তমান | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পাঁচটি নয়, খুনের সংখ্যা সাত! কাটিহার এক্সপ্রেসে তবলা শিক্ষক সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়কে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সিরিয়াল কিলার রাহুল জাঠের অপরাধের সিন্দুক যত খুলছে, ততই চোখ কপালে উঠছে তদন্তকারী অফিসারদের। ঘটনার পুনর্নির্মাণ, ব্যাকগ্রাউন্ড চেক এবং লাগাতার জেরায় এই নতুন তথ্য হাতে এসেছে তাঁদের। গুজরাত পুলিস সূত্রে খবর, আরও দু’টি খুনের কথা রাহুল ওরফে ভোলু কবুল করে নিয়েছে। আর সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়েছে ‘আনক্লোজড ফাইলের’ খোঁজ। আর সবটাই রেল সংক্রান্ত। কারণ কাকে খুন করেছে, সে ব্যাপারে খোলসা না করলেও ওই দু’টি ঘটনাও যে সে ট্রেনেই ঘটিয়েছে, তা স্বীকার করে নিয়েছে সিরিয়াল কিলার।


    অভিযুক্ত রাহুল জাঠের বিরুদ্ধে তদন্তে নেমে অফিসাররা জানতে পারছেন, উদয়ওয়াড়ায় কিশোরীকে ধর্ষণ-খুনের পর আরও দু’টি ঘটনা ঘটায় সে। লুট করে তিনটি মোবাইল। তবলা শিক্ষকের মোবাইলটিতে কিছু টেকনিক্যাল সমস্যা হচ্ছিল। বারবার বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল সেটি। আবার তরুণীর মোবাইলে ছিল ‘প্যাটার্ন লক’। তৃতীয় ফোনটিরও ছিল এক সমস্যা। তাই প্রথমে সেগুলি খুলতে পারেনি রাহুল। সেকেন্দ্রাবাদে খুনের পর একটি স্টেশনে নামে রাহুল। প্ল্যাটফর্মের বাইরে এসে মোবাইল রিপেয়ারিংয়ের দোকানে যায়। তাতেও অবশ্য লাভ হয়নি। কোনও দোকানই মোবাইল আনলক করতে পারেননি। তাও সেটি না ফেলে নিজের কাছেই রেখে দিয়েছিল সিরিয়াল কিলার। সে জানত, বান্দ্রায় মোবাইল মেরামতির অনেক দোকান রয়েছে। তারা যে কোনও ধরনের মোবাইল খুলতে দক্ষ। তাই বান্দ্রায় পৌঁছেই স্টেশন লাগোয়া একটি দোকান থেকে দু’টি ফোনের প্যাটার্ন লক খোলে সে। তবলা শিক্ষকের ফোনটির টেকনিক্যাল সমস্যাও মেটায়। এরপর শুরু করে ব্যবহার। বিশ্বাস ছিল, পুলিস তাকে ধরতে পারবে না। কারণ হিসেবে তদন্তকারীদের সে বারবার লোকেশন বদলের কথা জানিয়েছে। রাহুল মনে করেছিল, এভাবে রাজ্য বদলালে মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থার জোনও বদলে যাবে। ফলে, পুলিস কিছুতেই ট্র্যাক করতে পারবে না। এই সবটাই নাকি সে শিখেছিল গুগল ঘেঁটে। তাই মোবাইল ব্যবহার করছিল ভয়ডর ছাড়াই।


    কিন্তু আরও দু’টি খুন? সিরিয়াল কিলারের অপরাধের বহর কতটা, তা জানার জন্য লাগাতার চাপ দিয়ে গিয়েছেন তদন্তকারীরা। প্রথমে অস্বীকার করলেও জেরার মুখে ভেঙে পড়ে সে। স্বীকার করে, আরও দু’টি ঘটনা ঘটিয়েছে। কিন্তু কবে? অফিসারদের রাহুল জানায়, মনে পড়ছে না। যদিও তদন্তকারীদের ধারণা, জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছে সে। এমনকী কোন ট্রেনে খুন করেছে, সেটাও বলতে চাইছে না রাহুল। বলছে, বহুবার ট্রেন বদলেছি। তাই কোন ট্রেন বলতে পারব না। অফিসারদের ধারণা, এখানেই কিছু গোপন করছে সে। তাই বিভিন্ন রাজ্যে ট্রেনে খুন হওয়া ব্যক্তিদের ছবি দেখিয়ে গোটা বিষয়টি জানার চেষ্টা করছে গুজরাত পুলিসের স্পেশাল টিম।
  • Link to this news (বর্তমান)