শুভাশিষ মণ্ডল । অয়ন ঘোষাল: উলুবেড়িয়া শহরের ব্যস্ততম গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার দুধারে যত্রতত্র চারচাকা গাড়ি রাখা যাবে না এমনই নির্দেশিকা জারি করে পার্কিং জোনে গাড়ি রাখা বাধ্যতামূলক করে ছিল উলুবেড়িয়া পুরসভা। শহরের ব্যস্ততম রাস্তাকে যানজট মুক্ত রাখতে তাদের এই উদ্যোগ। ২০২০ সালের মার্চ মাসের প্রথম দিকেই উলুবেড়িয়া পুরসভা কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে তৈরি করা এই পার্কিং জোনের উদ্বোধন করেছিল। গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় নির্ধারিত করে মূল্য ধার্য করেছিল পুরসভা। রাস্তার দুই ধারে পার্কিং না করে পুরসভার পার্কিং জোনে গাড়ি রাখার ব্যবস্থা করেছিল উলুবেড়িয়া পৌরসভা৷ কিন্তু পার্কিং জোন চালু করার পরও শহরের যানজট সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারছিল না।
উলুবেরিয়া শহরে প্রশাসনিক কার্যালয় মেডিকেল কলেজ আদালত থাকায় প্রতিনিয়ত শহরে মানুষের চাপ বাড়তেই থাকতো এর ফলে শহরের বুক চিরে চলে যাওয়া ও টি রোডের দুধারে বিশেষত বাজারপাড়া, ভক্তার মোড়, উলুবেড়িয়া স্টেশন রোডের পাশে যত্রতত্র গাড়ি পার্ক করে রাখা এই সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে। পুরসভার পক্ষ থেকে শুরু করা হয়েছিল মাইক প্রচারও।
উলুবেড়িয়া শহরের যানজট ছিল প্রশাসনের কাছে এক বড় সমস্যা। বিশেষ করে বাজারপাড়া পান আড়ৎ থেকে ভক্তার মোড় এবং উলুবেড়িয়া ষ্টেশন রোডে ব্যাঙের ছাতার মত রাস্তার দু'ধারে গজিয়ে ওঠা নার্সিংহোমের গাড়ি পার্কিং না থাকায় তার ফলে যে যানজট হত সেই যানজট প্রশাসনের মাথা ব্যাথার অন্যতম কারন হয়ে ওঠে। সাধারন মানুষের অভিযোগ মুলত উলুবেড়িয়া শহরের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ওটি রোডের দুইপাশে এবং ষ্টেশন রোডের দুইপাশে বেআইনিভাবে গাড়ি পার্কিং করে রাখার ফলেই এই যানজট। যদিও শহরের এই যানজট দূর করতে উদ্যোগী হয় উলুবেড়িয়া পুরসভা। তারপরেই এই উলুবেড়িয়া পার্কিং জোন তৈরি করা৷ কোন গাড়িকে রাস্তার পাশে বেআইনিভাবে পার্কিং করতে দেওয়া হবেনা, পরিবর্তে তাদের পুরসভার নির্ধারিত পার্কিং জোনে গাড়ি পার্কিং করতে হবে।
প্রসঙ্গত, উলুবেড়িয়া পুরসভার চেয়ারম্যান অভয় দাস জানান, আমরা পার্কিং জোন যে এজেন্সিকে দিয়েছি তা নিতে কতক্ষণ তাছাড়াও আমরা পার্কিং করার জন্য আরো অন্যান্য জায়গা রেখেছি উলুবেড়িয়া স্টেডিয়াম উলুবেড়িয়া হাসপাতাল উলুবেড়িয়া পুরাতন হাসপাতাল সহ কয়েকটি জায়গা৷ যদিও এইসব জায়গায় গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধা আছে উলুবেড়িয়া স্টেডিয়ামে খেলা চলে সেখানে কিভাবে গাড়ি পার্কিং করা যায়? পাশাপাশি পুরাতন হাসপাতাল অথবা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এখানেও গাড়ি রাখার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে কেননা হাসপাতলে নিরাপত্তার স্বার্থে শুধুমাত্র রোগের গাড়ি রোগী নামিয়ে পাশে পার্কিং করতে পারে৷ উলুবেড়িয়ায় নানান কাজে আসা অন্যত্র গাড়ি সেখানে ঢুকে পার্কিং করে রাখার মতন জায়গা হাসপাতাল চত্বরে নেই৷ পৌরসভার চেয়ারম্যান অন্যান্য পার্কিংয়ের কথা বললেও তা যে আদৌ ফলপ্রসু হচ্ছে না বর্তমানে উলুবেড়িয়া শহরের যানজট তার প্রমাণ৷
মনোহর পুকুর রোড। রাস্তার ফাঁকা অংশে লম্বা নয়, একেবারে চওড়া করে গাড়ি পার্কিং। রাসবিহারী অ্যাভিনিউ। রাস্তা তো বটেই। ফুটপাথে পার্কিং। সাদার্ন অ্যাভিনিউ। গোটা ফুটপাথ পার্কিংয়ের দখলে। পথচারীর হাঁটাচলার উপায় নেই। লেক টেম্পল রোড। নো পার্কিং বোর্ড সহ রাস্তায় গার্ড রেল বসিয়ে রেখেছে পুলিশ। সেখানেও পার্কিং। পার্কিং দীর্ঘ সময় ধরে। কারণ গাড়ির সামনের কাছে পড়ে আছে গাছের পাতা। অর্থাৎ পার্কিং টি সম্পূর্ণ বেআইনি হলেও নজরদারির বালাই নেই। হরিশ মুখার্জি রোড। রাস্তার দুপাশে পার্কিংয়ের দাপট। মাঝে রাস্তা সংকীর্ণ। অত্যন্ত মন্থর গতিতে চলছে গাড়ি। খাস কলকাতারও একই ছবি। যত্রতত্র অবৈধ পার্কিং, যানজটে ভোগান্তি। উত্তরবঙ্গ থেকে দক্ষিণবঙ্গ সব জায়গায় এক ছবি। শহর কলকাতাতেও পার্কিং সমস্যায় জেরবার সাধারণ মানুষ। জলপাইগুড়ি, উলুবে়ড়িয়াতেও পার্কিং নিয়ে একই ছবি। বহু জায়গায় পার্কিংয়ের জায়গাও পর্যাপ্ত নেই।