কলকাতায় সব হোর্ডিং, সাইনবোর্ডে বাংলা ভাষা আবশ্যিক, নির্দেশ পুরসভার
আজ তক | ০২ ডিসেম্বর ২০২৪
অনেকেরই মতে কোথাও যেন ক্রমশ কলকাতার বুক থেকে হারিয়ে যেতে বসেছিল বাংলা ভাষা। কলকাতার বহু রাস্তা রয়েছে সেখানে বাংলা ভাষা কার্যত চলে না বললেই চলে। আর এই আবহেই বড় সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুরসভা। কলকাতায় দোকান, রেস্তরাঁ, রাস্তার নামফলক থেকে শুরু করে সরকারি ও বেসরকারি দফতরের সাইনবোর্ড—এ বার থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে বাংলায় লিখতে হবে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার তরফে এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। লক্ষ্য, বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষা এবং এর ব্যবহার নিশ্চিত করা।
বিজ্ঞাপনী হোর্ডিং থেকে দোকানের সাইনবোর্ড, সরকারি দফতরের নামের বোর্ড থেকে রাস্তার নামফলক— সবই এ বার থেকে বাধ্যতামূলক ভাবে লিখতে হবে বাংলাতেও। গত ২৬ অক্টোবর কলকাতা পুরসভার মাসিক অধিবেশনে ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের পুরপ্রতিনিধি বিশ্বরূপ দে এই বিষয়ে প্রস্তাব আনেন। তিনি জানান, বাংলা ভাষা ধ্রুপদী ভাষার স্বীকৃতি পেয়েছে, তাই সমস্ত নামফলক ও সাইনবোর্ডে বাংলার উপস্থিতি থাকা আবশ্যক। মেয়রের সম্মতি পাওয়ার পর পুর সচিব স্বপনকুমার কুণ্ডু এই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেন। এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, দোকান বা রেস্তরাঁর নামফলকে অন্যান্য ভাষার পাশাপাশি বাংলায় লেখা বাধ্যতামূলক করা হবে। কলকাতা পুলিশ এবং পুরসভার যৌথ উদ্যোগে প্রতিটি থানার মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের এই বিষয়ে বার্তা দেওয়া হবে। লালবাজারের তরফে শহরের প্রতিটি থানায় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে যাতে থানার ওসি-রা এই নিয়ম বাস্তবায়নে তদারকি করেন।
এই প্রক্রিয়াটি শুরু করার জন্য ২১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এর একটি অস্থায়ী সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। মিউনিসিপ্যাল সেক্রেটারি স্বপন কুন্ডু বলেন, কর্পোরেশন দোকান, রেস্তোরাঁ এবং অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে যাতে আউটলেটগুলির নাম এবং অন্যান্য তথ্য অন্য যেকোনো ভাষার পাশাপাশি বাংলায় লেখা হয়।
কলাতা পুরসভার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও এর আগে বলেছিলেন যে তিনি বেসরকারি বিজ্ঞাপন সংস্থা এবং দোকানগুলিকে তাদের সাইনবোর্ড বাংলা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করবেন। তিনি বলেছিলেন, “ব্যানার, ফেস্টুন, সাইনবোর্ড এবং যোগাযোগের এই ধরনের পদ্ধতিতে হিন্দি, ইংরেজি বা অন্যান্য ভাষার ব্যবহারের বিরুদ্ধে আমার কিছুই নেই। তবে, অন্যদের সঙ্গে বাঙলাও সেখানে থাকা উচিত।” প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে কেএমসি দ্বারা অনুরূপ পদক্ষেপে, তৎকালীন মেয়র বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য দোকান মালিকদের সাইনবোর্ডগুলিতে অন্যান্য ভাষার সঙ্গে বাংলা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করার জন্য নোটিস জারি করেছিলেন, কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।