বিলের চারপাশে বনভূমি। বিশাল জলাধার। দুটি গেস্ট হাউস। বিলের চারপাশের কয়েক কিলোমিটার রাস্তা। সুন্দর করে সাজানো লোহার ব্রিজ। নৌকোবিহারের ব্যবস্থা। চক্রহাতপুর, কুঠিরপাড়া, বড় কোবলা-সহ বেশ কিছু গ্রামের প্রাণকেন্দ্র স্বরূপ গড়ে উঠেছে এই পর্যটনকেন্দ্র। আসছেন পর্যটকেরা, আগে শুধুমাত্র শীতের সময় পর্যটকদের ভিড় থাকত। এখন সারা বছরই লোক আসে। পাশাপাশি স্থানীয়দেরও ভিড় হয় এখানে। নতুন নতুন দোকানপসারও খুলছে এখানে। পাখিপ্রেমীরা নৌকা করে ছবি তুলতে আসেন। চাহিদা বাড়ছে হোমস্টেরও। গ্রামীণ মানচিত্রে এই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠায় খুশি এলাকাবাসী।
এদিকে শীত পড়লেও পাখি নেই দক্ষিণবঙ্গের আর এক বিখ্যাত ঝিলে। সাঁতরাগাছি ঝিলে দেখা নেই পরিযায়ী পাখির। কেন? ঝিল সংস্কার না হওয়ায় পাখিরা ঝিলে আসছে না বলে মনে করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সাঁতরাগাছি স্টেশনের পাশেই রয়েছে ১৩ একরের বিশাল এই জলাশয়। ঝিলটি সাঁতরাগাছি পাখিরালয় নামে পরিচিত। কারণ শীতের শুরুতে এখানে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখি। হিমালয়ের পাদদেশ, এমনকি সুদূর সাইবেরিয়া থেকে পাখি আসে এখানে। যা দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। আসেন পাখিপ্রেমীরা। ক্যামেরাবন্দি করেন পাখির ছবি। শীতের সময়ে কলকাকলিতে অন্যরকম পরিবেশ তৈরি হয় এই ঝিলে।
কিন্তু এবছর এখনও সেই পাখিদের দেখা নেই। কারণ হিসাবে স্থানীয়রা মনে করছেন, ঝিল ঠিকমতো পরিষ্কার না হওয়ায় হয়তো ঝিল থেকে ক্রমশ মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পাখিরা। তাঁরা জানান, প্রতিবার পুজোর পরেই ঝিল পরিষ্কার করে পাখিদের নিরাপদ আস্তানা গড়ে দেওয়া হয়। এবছর সেই কাজ এখনও হয়নি। ঝিলের জল ঢেকে কচুরিপানায়। এলাকার নোংরা জল গিয়ে মিশছে ঝিলে। লোহার জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল ঝিল। সেই বেড়া ভেঙে গিয়েছে। নোংরা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে ঝিলে। সব মিলিয়ে পরিবেশ দূষিত এখানে।
এলাকার মানুষজনের দাবি, অবিলম্বে এই ঝিলের প্রতি নজর দিক প্রশাসন। তা না হলে এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য কোথাও চলে যাবে পরিযায়ী পাখির দল। হাওড়ার পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান, ঝিলটি রেলের। আর এর সংলগ্ন এলাকা পুরসভার। তাই রেলের সঙ্গে কথা বলে ঝিলটি সংস্কার করে যাতে এখানে পাখিদের থাকার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা যায়, সেব্যবস্থা নেওয়া হবে।