এমনই এক সমস্যায় পড়েছে নদিয়ার কালীনারায়ণপুরের পাহাড়পুর এলাকার মল্লিক পরিবার। দুটি স্কুল অবশ্য শিশুদুটির ভর্তি নিয়ে আইনত জটিলতা দেখিয়ে দায় সেরেছে। একসময় পাহাড়পুর প্রাইমারি স্কুলে মল্লিক পরিবারের দুই ছেলে পড়াশোনা করত। একজনের বয়স ১০। অন্যজনের ৫ বছর। অভিযোগ, শিশুদের পরিবার যেহেতু ডোমের কাজ করতেন সেহেতু ওদের পাশে কেউ বসতো না। পাশাপাশি কটুক্তি করত এবং পাশে বসে মিড ডে মিল খাওয়া বন্ধ করে দেয় এলাকার অন্য শিশুরা। শ্মশানটি পাহাড়পুর লাগোয়া পার্শ্ববর্তী গ্রাম এরান্দাপোতা অবস্থিত। তাই দূরত্বে কারণে রাত বেরোতে তাদের আসতে অসুবিধা হত মৃতদেহের দাহ এর কাজ করে। সেই কারণে পাহাড়পুর থেকে এরান্দাপোতা শ্মশানে চলে এসেছেন পরিবার নিয়ে। শ্মশানের ভেতরেই রয়েছে বীরনগর পৌরসভার একটি সরকারি আবাসন। সেখানেই তারা থাকেন। পাশেই যে বিদ্যালয়ে রয়েছে সেই বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য বলা হলেও তাদেরকে আজকে নেব কালকে নেবো বলে দায় এড়িয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
শ্মশানকর্মী রবি মল্লিকের দাবি, ছোট জাত বলে স্কুলে নেয় না। ছেলেকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছিলাম। তাতেও ভর্তি হয়নি। ব৮লছে এই কাগজ লাগবে, ওই কাগজ লাগবে। যে কাগজ কুড়োয় তার ছেলে যদি স্কুলে পড়তে পারে আর আমার ছেলে পড়তে পারবে না? আমি চাই আমার ছেলেরা স্কুল পড়ুক।
এদিকে, এ বিষয়ে পাহাড়পুর বিদ্যালয়ের দাবি, এখনো বিদ্যালয়ে ওই ২ শিশুর নাম রয়েছে কিন্তু তারা স্কুলে আসে না। বিদ্যালয়ের তরফ থেকে জানানো হয় তারা যদি বিদ্যালয়ে আসতে চায় আসতে পারে। কারোর কোন সমস্যা নেই। এছাড়া তারা যদি অন্য বিদ্যালয় পড়তে চান তাহলে আমাদের বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে যা যা করণীয় তারা যোগাযোগ করলে তাদেরকে দিয়ে দেওয়া হবে।
এরান্দাপোতা বিদ্যালয়ের দাবি সরকারি নিয়ম অনুযায়ী তাদেরকে টিসি নিয়ে এলে তাদেরকে আমরা ভর্তি নেব। আগেও এসেছিল আমরা তাদেরকে বলে দিয়েছি। তার পর আর যোগাযোগ করেনি। তবে এ বিষয়ে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য বলেন এ বিষয়ে কেউ আমাদের কেউ কিছু জানাননি। তবে আমি তাদের সাথে কথা বলব এবং তাদের ভর্তির ব্যবস্থা করে দেব। এনিয়ে হবিবপুর বিডিও বলেন, আমরা বিষয়টি খোঁজ নিচ্ছি তবে "এদের লেখাপড়ার যদি কোন রকম সমস্যা হয় তবে সরকারি হোমে তাদের পড়ানোর ব্যবস্থা করা হবে "। মল্লিক পরিবারের আক্ষেপ আমরা চাই না আমাদের ছেলেরা আমাদের মতো হোক "আমরাও চাই আর পাঁচটা ছেলে মেয়ের মতো তারাও মানুষ হোক ।