চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তার ও হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে পেট্রাপোল সীমান্তে সন্ন্যাসীদের বিক্ষোভে শুভেন্দু
দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
বাংলাদেশে চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সোমবার বনগাঁর পেট্রাপোল সীমান্তে সন্ন্যাসীদের বিক্ষোভ। সেখানে সামিল হয়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু এই বিক্ষোভে ভাষণ দেওয়ার সময় বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা প্রতিনিধিদের হুমকি দিয়ে ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে হুঁশিয়ারি দেন।
বাংলাদেশ সীমান্তে দাঁড়িয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘এই রাজাকারের নতুন বাচ্চাদের ভারত আত্মসমর্পণ করাবে’। পাশাপাশি, তিনি ভারত থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি করা আলু-পেঁয়াজ থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বন্ধ করে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “এটা আমরা ট্রেলার দেখিয়ে গেলাম। অত্যাচার বন্ধ না হলে এবং প্রভু মুক্তি না পেলে, এর পরের সপ্তাহে আমরা ৫ দিন সীমান্ত বন্ধ করব। তারপরে আমরা ২০২৫ সালে লাগাতার বন্ধ করে আমরা দেখিয়ে দেব, ওরা আলু-পেঁয়াজ কী করে খায়। ভারতের পতাকা যারা পদদলিত করেছে, ‘৭১-এর রাজাকারের মতো, যেমন পাকিস্তানের আর্মি চিফ আত্মসমর্পণ করেছিলেন, এই রাজাকারের নতুন বাচ্চাদের ভারত আত্মসমর্পণ করাবে। ভারত আজ আর একটা দেশ নয়, নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে পৃথিবীর একটা শক্তিশালী রাষ্ট্র।”
এদিন এই বিক্ষোভে সন্ন্যাসীদের সঙ্গে সামিল হন প্রচুর সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি ছিল, বাংলাদেশে প্রতিনিয়ত হিন্দুদের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে, তা বন্ধ করা এবং সন্ন্যাসীদের নিঃশর্ত মুক্তি। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সীমান্তের জিরো পয়েন্টের কাছে যাতে কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেবিষয়ে সতর্ক ছিলেন বিএসএফ জওয়ানরা।
প্রসঙ্গত চিন্ময়কৃষ্ণের গ্রেপ্তারের মধ্যেই ভারত ও বাংলাদেশে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তার মধ্যেই ফের আরও ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেদেশের পুলিশ। এরফলে প্রভু চিন্ময়কৃষ্ণ সহ মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচজন। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি ভারতে আসার পথে বাংলাদেশের বেনাপোল প্রচুর ইসকন ভক্তকে আটকে দেওয়া হয়েছে। যা নিয়ে সন্ন্যাসীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। বৈধ পাসপোর্ট সত্ত্বেও তাঁদের ভারতে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি ইসকনের সদস্যদের। বাংলাদেশ সরকারের আপত্তিতে এই কাজ করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। সরকারের ধারণা, এই সন্ন্যাসীরা বিশেষ কোনও উদ্দেশ্য নিয়ে ভারতে আসছে। সেজন্য তাঁদের আটকে দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। এবিষয়ে বেনাপোল ইমিগ্রেশন চেকপোস্টের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক ইমতিয়াজ আহসানুল কাদের ভূইয়া বাংলাদেশের একটি সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন,”আমরা পুলিশের বিশেষ শাখার সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করেছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁদের অনুমতি না দেওয়ার নির্দেশ পেয়েছি।”
বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ওই ৫৪ জন ইসকন সদস্য শনিবার থেকে বেনাপোল সীমান্তে অপেক্ষা করছিলেন। তাঁরা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগদান করতেই ভারতে আসছিলেন। কিন্তু কোনও সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই রবিবার তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়।