ভোজনরসিক বাঙালির পছন্দের খাদ্যতালিকার প্রথম দিকেই স্থান পায় নতুন গুড় বা নলেন গুড় বা সেই গুড়ের পাটালি। পাশাপাশি এই গুড় দিয়ে তৈরি হয় সব রকমারি সুস্বাদু খাবার। সেসবেরও খুব কদর বাঙালি রসনায়। আর তাই শীত পড়লেই বাড়ে নলেন গুড়ের চাহিদা। এবারও সেই ছবি। এখন তাই কাজে ব্যস্ত পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রাম, মানকরের শিউলিরা। কোথাও কোথাও যাঁদের পাশি বলা হয়।
এবারেও শীত আসতে না আসতেই বাঙালিদের পছন্দের নলেন গুড়ের চাহিদা আকাশছোঁয়া হয়ে উঠেছে। বাজারে কোথাও কোথাও এসেও গিয়েছে নলেনগুড়। কোথাও কোথাও জিরেন কাঠের গুড়ও। গুসকরা থেকে দুর্গাপুর যাওয়ার রাজ্য সড়কের দু'ধারে থাকা অসংখ্য খেজুর গাছ নলেন গুড়ের তৈরির জায়গা। নদীয়া জেলা থেকে আসা শিউলিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তৈরি করছেন খাঁটি খেজুর গুড়। এগুলি পূর্ব বর্ধমান জেলা, এমনকি ভিন জেলার বিভিন্ন প্রান্তের চাহিদা পূরণ করছে। এখানকার গুড়ের বিশেষ স্বাদ এবং গুণমানের জন্য এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে জেলাশহর থেকে দূর মফসসল পর্যন্ত।
গুড় প্রস্তুতকারী একজন জানান, তাঁরা শীত পড়ার প্রায় একমাস আগে থেকে এসে গাছ পরিষ্কার করে যান। শীত পড়তেই শুরু হয় গাছ থেকে রস সংগ্রহ। বাজারে গুড়ের চাহিদা বেশি থাকায় তীব্র ব্যস্ততায় সময়মতো খাওয়া-দাওয়া হয়ে ওঠে না তাঁদের। তবুও, এটিই তাঁদের জীবন-জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। ক্রেতাদের মতে, এই অঞ্চলের গুড়ের স্বাদ অন্য জায়গার তুলনায় অনেকটাই ভাল।
নলেন গুড়ের উৎপাদন শুধু গ্রামীণ অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করছে না, নদীয়ার শিউলিদের কর্মব্যস্ত জীবনকে অন্য মাত্রা দিচ্ছে। শীতের আবহে গুড় তৈরির এই ঐতিহ্য বাংলা সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।