• সময়ে বাড়ি কী ভাবে, মুশকিল আসান করতে রাজমিস্ত্রিদের প্রশিক্ষণ
    এই সময় | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • চাঁদকুমার বড়াল, কোচবিহার

    কাজ শেষ করতে হবে নির্দিষ্ট সময়ে। এ দিকে, শ্রমিক ও কাঁচামালের জোগান কম হলে মুশকিল। সেই মুশকিল আসান করতেই আগাম কিছু পদক্ষেপ করছে কোচবিহার জেলা প্রশাসন।

    জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগামী ২১ ডিসেম্বর থেকে আবাস যোজনার উপভোক্তাদের প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষের ৩১ মার্চের মধ্যে সেই আবাস যোজনার কাজ শেষ করতে হবে। সব মিলিয়ে হাতে রয়েছে কমবেশি ১০০ দিন। ফলে শুধু টাকা দিলেই হবে না, লক্ষাধিক ঘর তৈরি করতে প্রয়োজন পর্যাপ্ত রাজমিস্ত্রি এবং ইট-সহ যাবতীয় নির্মাণসামগ্রীও।

    এই পরিস্থিতিতে কোচবিহার জেলা প্রশাসন রাজমিস্ত্রিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই সঙ্গে, ইটভাটার মালিকদের সঙ্গেও বৈঠকও করা হবে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌমেন দত্ত বলছেন, ‘রাজমিস্ত্রিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। ইট ও নির্মাণসামগ্রীর জোগানের জন্যও সংশ্লিষ্ট লোকজনের সঙ্গে বৈঠক করা হবে। সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতেই এই পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’

    কোচবিহার জেলায় প্রায় ৩ লক্ষ ৯১ হাজার বাড়িতে সমীক্ষা হয়েছে। সেখান থেকেই চূড়ান্ত হবে উপভোক্তাদের প্রথম পর্বের তালিকা। প্রথম পর্যায়ে প্রায় ১ লক্ষ ৩০ হাজার বাড়ির অনুমোদন পেতে পারে। ২১ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম কিস্তির ৬০ হাজার টাকাও দেওয়া হবে উপভোক্তাদের। জেলা জুড়ে একসঙ্গে এতগুলো ঘর নির্মাণ করতে দরকার প্রচুর রাজমিস্ত্রি। সেই কারণে, ১৪ দিনের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত লোকজনকে। গত ২০২১ সালেও এই জেলায় ঘর তৈরির জন্য প্রায় পাঁচ হাজার রাজমিস্ত্রির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

    সরকারি হিসেব অনুযায়ী, আবাস যোজনার প্রতিটি ঘর তৈরি করতে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার ইটের প্রয়োজন। সেই সঙ্গে প্রয়োজন বালি, পাথর, সিমেন্ট-সহ অন্য সামগ্রী। ইটের গুণগত মান ও দাম যাতে ঠিক থাকে সে ব্যাপারে এ মাসেই ভূমি সংস্কার দপ্তর ইটভাটার মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করবে। কারা এই প্রশিক্ষণ নিতে পারবেন?

    জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, যাঁরা নির্মাণ কাজের সঙ্গে অল্পবিস্তর জড়িত তাঁদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। পঞ্চায়েত থেকে ব্লক হয়ে সেই তালিকা জেলায় আসবে। প্রশিক্ষণের কাজে অভিজ্ঞদের কাজে লাগানো হবে। কোচবিহার থেকে বহু মানুষ ভিন রাজ্যে কাজে যান। তাদের মধ্যে অনেকেই নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত।

    পুন্ডিবাড়ির বাসিন্দা এক্রামুল হক ও আনসারুল হক বলছেন, ‘আমরা হায়দরাবাদে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজ কাজ করি। এখন নিজেদের জমির ধান কাটতে বাড়ি এসেছি। হায়দরাবাদে দৈনিক গড়ে এক হাজার টাকা আয় হয়। সরকারি প্রশিক্ষণ শেষে যদি আবাস যোজনার ঘর তৈরির কাজে যুক্ত হতে পারি তাহলে কয়েকমাস আর বাইরে যাব না। রোজগার হয়তো কিছুটা কম হবে। তবে শান্তিতে কিছুদিন বাড়িতে তো থাকতে পারব।’
  • Link to this news (এই সময়)