• আরামবাগ মহকুমায় শস্য বিমায় আবেদন প্রায় ২ লক্ষ কৃষকের
    বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বাংলা শস্য বিমায় আবেদন করেছেন আরামবাগ মহকুমার বহু চাষি। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মহকুমার প্রায় দু’লক্ষ চাষি আবেদন করেছেন। যাঁরা আবেদন করেছেন, তাঁদের ফর্ম খতিয়ে দেখে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে। সরকারি নির্দিষ্ট নিয়মে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব চলছে। বন্যা কবলিত আরামবাগ মহকুমায় ধানচাষে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তাই চাষিরা ধানের ক্ষতিপূরণ পাবেন বলে আশায় বুক বাঁধছেন। 

    গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে শস্য বিমায় আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়। পরে চাষিদের অসুবিধার কথা ভেবে সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করা হয়। প্রশাসন কার্যত চাষিদের দুয়ারে গিয়ে বিমার আবেদন গ্রহণের নির্দেশ দেয়। সেইমতো পঞ্চায়েত কার্যালয়ের পাশাপাশি অন্যান্য প্রতিষ্ঠানেও শিবির করে বিমার আবেদন নেওয়া হয়। কৃষিদপ্তরের দাবি, গত সপ্তাহ পর্যন্ত আরামবাগ মহকুমায় ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৭৮২ জন চাষি বাংলা শস্যবিমায় আবেদন করেছিলেন। ১ লক্ষ ৪৫ হাজার ৬১৬ জন চাষির আবেদনপত্র অনুমোদন করা হয়েছে। তবে এই সংখ্যা বর্তমানে অনেকটাই বেড়েছে বলে জানিয়েছে কৃষিদপ্তর। 

    কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ ব্লকে প্রায় ৪৬ হাজার চাষি আবেদন করেছিলেন। তারমধ্যে ৪০ হাজার চাষির আবেদন খতিয়ে দেখে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। খানাকুল-১ ব্লকে প্রায় ৪০ হাজার চাষি আবেদন করেন। সেখানেও গত সপ্তাহ পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি আবেদন অনুমোদন হয়েছে। খানাকুল-২ ব্লকের ক্ষেত্রেও ২৫ হাজার আবেদন আসে। সেইসব আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে ১৫ হাজার ৭০০ জনকে অনুমোদন দেয় কৃষিদপ্তর। গোঘাট-১ ব্লকে প্রায় ২০ হাজার চাষি আবেদন করেছিলেন। সেখানেও ১৭ হাজারের বেশি আবেদন অনুমোদন পেয়েছে। গোঘাট-২ ব্লকেও প্রায় ২৪ হাজার চাষি আবেদন করেছিলেন। ওই ব্লকেও অধিকাংশ আবেদন অনুমোদন দেওয়া হয়। পুরশুড়া ব্লকে ২৫ হাজার চাষি বাংলা শস্যবিমায় আবেদন করেছিলেন। সেখানেও গত সপ্তাহ পর্যন্ত ২০ হাজার চাষির আবেদন অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কৃষিদপ্তরের এক আধিকারিক বলেন, প্রত্যেক ব্লকেই গত কয়েকদিনে আবেদনের সংখ্যা বেড়েছে। তারসঙ্গে অনুমোদনও দেওয়া হচ্ছে। চূড়ান্ত তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে। খরিফ মরশুমে ধানের ক্ষতিপূরণ যাতে চাষিরা পান, সেই লক্ষ্যেই অধিকাংশ চাষিকে বিমার আওতায় আনতে জোর দেওয়া হয়। সেইমতোই আবেদন সংগ্রহের কাজ হয়েছে। 

    উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর মাসে ডিভিসির ছাড়া জল ও অতি বৃষ্টির ফলে আরামবাগ মহকুমায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। বিশেষত খানাকুলের দু’টি ব্লকের সব পঞ্চায়েত এলাকাই কার্যত বন্যার জলে ডুবে যায়। অধিকাংশ কৃষি জমি জলের তলায় ছিল। দীর্ঘদিন ধান জমি জলমগ্ন হয়ে থাকায় সিংহভাগ আমন ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খানাকুলের চাষি উত্তমকুমার সামন্ত, পীযূষ মণ্ডল বলেন, নদী বাঁধ ভেঙে আমাদের এলাকায় হু হু করে বন্যার জল ঢোকে। প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়। ঘরবাড়ির পাশাপাশি কৃষি জমিতে থাকা ধানও নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শস্য বিমায় আবেদন জানিয়েছি। ক্ষতিপূরণ পেলে অনেকটাই সুবিধা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)