• কুয়াশার কারণে দুর্ঘটনা কমাতে ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করার নির্দেশ
    বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: সচেতনতামূলক প্রচার এবং ট্রাফিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন সত্ত্বেও দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা যথেষ্ট উদ্বেগজনক। জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত মাত্র চার মাসে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেট এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৮৮ জন। যদিও পুলিসের দাবি, শেষ দুই বছর এই সময়ে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যার ছিল ১৩০। সামনেই শীতকাল, দুর্ঘটনার সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ে তা নিয়ন্ত্রণ করতে ইতিমধ্যেই নির্দেশিকা পাঠিয়েছে রাজ্য সরকার। পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় সড়ক ও রা঩‌জ্য সড়কের উপর নাকা চেকিং করিয়ে চালকদের চা বিস্কুট, জল খাওয়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কুয়াশায় ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করতেও নানা নির্দেশ এসেছে। 

    কুয়াশার মধ্যেও যাতে গার্ডরেল নজরে পড়ে, তাই গার্ডরেলের উপর ফ্ল্যাশার লাইট, সিগন্যাল ব্লিংকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কমিশনারেট এলাকায় ১৪টি নতুন পুলিস অ্যাসিস্ট্যান্স বুথ তৈরি করা হচ্ছে। কারণ, দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত ট্রাফিক পুলিস সেখানে গিয়ে যাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। পুলিস কর্মীদের শোল্ডার ফ্ল্যাশার ও হ্যান্ড হেলথ সিগন্যাল ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। হাইস্পিডে যাওয়া গাড়ি বাইককে ধরতে স্থায়ীভাবে স্পিড ডিটেকশন ক্যামেরা বসছে আসানসোলের শীতলা মোড়ের কাছে। গাড়ির নম্বর প্লেট স্ক্যান করে গাড়ি বা বাইক মালিকের কাছে ফাইনের চিঠি পৌঁছে যাবে। অন্যদিকে মঙ্গলবারই আসানসোল দুর্গাপুর পুলিস কমিশনারেটের ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে তিনটি পুজো কমিটিকে পুরস্কৃত করা হয়। সেফ ড্রাইড সেভ লাইফ কর্মসূচি ভালোভাবে প্রচার করার জন্য তাদের ৫০ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। তাদের কাছেও বছরভর এনিয়ে কর্মসূচি নিতে আর্জি করেন পুলিস কর্তারা। 

    ডিসি (ট্রাফিক) ভিজি সতীশ পশুমূর্তি বলেন, আমরা পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কমাতে পেরেছি। শীতকালের জন্য বাড়তি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। মঙ্গলবার আসানসোল ডিসি ট্রাফিক অফিসে পুরস্কৃত করা হয় খাস কাজোড়া সর্বজনীন দুর্গাপুজো কমিটি, জামুড়িয়ার শ্রীদুর্গা সেবা সমিতি ও দুর্গাপুরের বুদ্ধবিহার পুজো কমিটিকে। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে কমিটিগুলির কাছে পুলিস আর্জি জানিয়ে বলে, বছরের অন্য সময়েও যেন তারা মানুষকে সতর্ক করার দায়িত্ব পালন করে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারের নিজের ক্যাব অ্যাপ যাত্রীসাথী ব্যবহার করার আর্জিও জানানো হয়। 

    পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, জুলাই মাসে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আগস্টে ৪৭টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন, সেপ্টেম্বরে ৩০টি দুর্ঘটনায় ১৮ জন ও অক্টোবরে ৪১টি দুর্ঘটনায় ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার একটি বড় অংশ হয়েছে জাতীয় সড়কের উপর। অনেক ক্ষেত্রেই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে গাড়ি চালানোই মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। শীতকালে কুয়াশা ও শিল্পাঞ্চলের দূষণের জেরে দৃশ্য‌মানতা একেবারে কমে আসে। দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেক গুণ বেড়ে যায়। দুর্ঘটনার উপর রাশ টানাই এখন চ্যালেঞ্জ পুলিসের কাছে।
  • Link to this news (বর্তমান)