সংবাদদাতা, বহরমপুর: ডিসেম্বর মাস পড়তেই ডিমের দাম সাড়ে ৭ টাকায় পৌঁছল। সামনেই বড়দিন রয়েছে। কেকের চাহিদা বাড়বে। ফলে ডিমের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। শুধু মধ্যবিত্তরাই চিন্তিত নয়। ডিমের দাম বাড়ায় পড়ুয়াদের পাতে কীভাবে ডিম দেবেন তা নিয়ে ইতিমধ্যে স্কুলশিক্ষক ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কপালে চওড়া ভাঁজ পড়তে শুরু করেছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা ইতিমধ্যে স্থানীয় সুপারভাইজার ও সিডিপিওদের দ্বারস্থ হতে শুরু করেছেন। আধিকারিকরা কোনও পথ দেখাতে না পারায় চিন্তায় পড়েছেন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা।
এমনিতেই শীত পড়লেই প্রতিবছর ডিমের চাহিদা বাড়ে। চাহিদা বাড়ায় দামও বাড়ে। এবার শীতের শুরুতেই মুরগির ডিমের দাম তরতর করে চড়তে শুরু করেছে। বড় দিনের আগে ডিমের দাম মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাবে বলেই আশঙ্কা করছেন অনেকে। সোমবার বহরমপুরে বিভিন্ন খুচরো বাজারে সাড়ে ৭ টাকা পিস হিসেবে ডিম বিক্রি হয়েছে। একসঙ্গে এক ট্রে অর্থাৎ ৩০টি ডিম ২১০-২১৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সোমবার পাইকারি বাজারে এক পেটি বা ২১০টি ডিমের দাম পড়েছে ১৪১০-১৪২০ টাকা। স্বর্ণময়ী বাজারের খুচরো ডিম বিক্রেতা বীরেন সাহা বলেন, এবার ডিমের দাম সাড়ে ৬ টাকার নীচে নামেনি। শীত শুরু হতেই দাম আরও বাড়তে শুরু করেছে। বড়দিনের আগে ৮ টাকা ছাড়াবে। ডিমের পাইকারি বিক্রেতা বেবির শেখ বলেন, মুর্শিদাবাদের ডিমের জোগান মেটায় হায়দরাবাদ। জোগানের হেরফেরে দাম ওঠানামা করে। তবে এবার শীতে ডিমের দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা এখন বলা যাচ্ছে না। ডিমের দাম বৃদ্ধিতে সব থেকে বেশি ধাক্কা পড়েছে মিড ডি মিলে। মিড ডে মিলের জন্য ছাত্র প্রতি বরাদ্দ ছিল মাত্র ৫ টাকা ৪৫ পয়সা। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ৭৪ পয়সা বাড়িয়ে ৬ টাকা ১৯ পয়সা করেছে। যা নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রাথমিক স্কুলে সপ্তাহে একদিন পড়ুয়াদের পাতে ডিম পড়ে। বহরমপুর সদর পশ্চিম চক্রের তেজপাল লোহিয়া জিএসএফপি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনিন্দ্য সিংহ বলেন, বরাদ্দ টাকার থেকে ডিমের দাম ১ টাকা ৩১ পয়সা বেশি। যেদিন ডিম দেওয়া হয় সেদিন ঘাটতি পড়ে। এখন চালাচ্ছি। কিন্তু কতদিন চালাতে পারব জানি না। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে সপ্তাহে ছ’দিন শিশুদের পাতে ডিম দেওয়া হয়। ডিম কিনতে গিয়েই সব পুঁজি চলে যাচ্ছে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের দাবি, মুদি দোকানের খাতায় বাকির পাহাড় জমেছে। বহরমপুরের অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী নিয়তি চৌধুরী বলেন, সুপারভাইজারকে বিষয়টি জানিয়েছি। উনি বললেন চেয়ারে বসে কোনও পরামর্শ দিতে পারব না। যেভাবে চালাচ্ছেন চালান। কিন্তু আমাদের পিঠ দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে।