সংবাদদাতা, কান্দি: রাজ্য সরকারের নির্ধারিত নির্দেশ মেনে কেনা হচ্ছে না সহায়ক মূল্যে ধান। তাই বিডিওকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন চাষিরা। সোমবারের ওই ঘটনা ভরতপুর ১ ব্লকের কিষান মাণ্ডির। চাষিদের অভিযোগ, সরকারিভাবে চাষিপ্রতি ৩০ কুইন্টাল করে ধান নেওয়ার কথা জানানো হলেও এদিন তা মানা হয়নি। এদিন চাষির পরচা দেখে কতটা পরিমাণ ধান কেনা হবে, তা নির্ধারণ করা হয়। ফলে অনেকে মাণ্ডি থেকে ধান ফিরিয়ে নিয়ে গিয়েছেন। কোনও নোটিস ছাড়াই প্রশাসন এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে চাষিদের দাবি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনলাইনে আবেদন করার পর এদিন সাত সকালেই অনেক চাষি ধান নিয়ে কিষান মাণ্ডিতে চলে আসেন। এরপর সকাল ১০টার পর অফিস খুললে চাষিদের ধান বিক্রির স্লিপ বিলি করা হতে থাকে। গণ্ডগোল বাধে ওই সময়। সংশ্লিষ্ট প্রোজেক্ট অফিসার চাষিদের জানান, অনলাইন আবেদনে প্রত্যেক চাষির কাছে ৩০ কুইন্টাল ধান কেনার কথা থাকলেও এখানে তা মানা হবে না। এদিন যে চাষি তাঁর জমির রেকর্ড যতটা পরিমাণ দেখাতে পারবেন, সেই চাষির কাছ থেকে সেইমতো ধান নেওয়া হবে।
অথচ অধিকাংশ চাষি গড়ে ৩০ কুইন্টাল করে ধান নিয়ে মাণ্ডিতে চলে এসেছিলেন। ফলে ক্ষুব্ধ চাষিদের সঙ্গে তর্ক বাধে সংশ্লিষ্ট প্রোজেক্ট অফিসারের। এই খবর ভরতপুর ১ বিডিও দাওয়া শেরপাকে জানানোর পর বিডিও কিষান মাণ্ডিতে চলে আসেন। তিনি চাষিদের সঙ্গে কথা বলতে গেলে চাষিরা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বিডিও চাষিদের জানান, প্রত্যেক চাষির জমির পরিমাণ যা রয়েছে, তাতে ৩০ কুইন্টাল ধান হতে পারে না। ৩০ কুইন্টালের থেকে কারও ধান কম হতে পারে। আবার বেশিও হতে পারে। ওই সময় চাষিরা দাবি করেন, অনেকে জমি বন্ধক নিয়েও চাষ করেছেন। আবার এদিন জমির সমস্ত পরচা সঙ্গে আনা হয়নি। এনিয়ে সংবাদ মাধ্যমে বিডিও বলেন, সরকারি নির্দেশ মেনেই এদিন সহায়ক মূল্যে চাষিদের কাছে ধান কেনা হচ্ছে।
যদিও স্থানীয় তালগ্রামের চাষি রাজ মহম্মদ বলেন, এখানকার অফিসাররা কোনও কথাই শুনলেন না। ওঁদের হিসেবমতো কয়েক কুইন্টাল ধান বিক্রি করতে পারছি। বাকি ধান ফের গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি নিয়ে যেতে হচ্ছে। অপর চাষি বিনোদিয়া গ্রামের মুনাফা বিবি বলেন, বিডিও সাহেবও কোন কথা শুনছেন না। সরকার প্রতি চাষির কাছে ৩০ কুইন্টাল ধান নেওয়ার কথা বললেও এখানে নেওয়া হল না। অথচ সমস্ত ধানই নিজের জমির। চাষি সফিকুল ইসলাম বলেন, এখানে গায়ের জোর দেখানোর কোনও উপায় নেই। সবকিছু অফিসারদের হাতে। তবে এমন ঘটনা আগে কোনওদিন হয়নি। এদিনই প্রথম দেখলাম। ধান কেনার এমন নিয়ম সম্পর্কে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও নোটিসও দেওয়া হয়নি।