সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার ও দিনহাটা: সোমবার বিধানসভায় সদ্য নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান হল। বিধায়ক হিসেব শপথ নেন সিতাইয়ের সঙ্গীতা রায়, মাদারিহাটের জয়প্রকাশ টোপ্পোও। সিতাইয়ের প্রথম মহিলা বিধায়ক হলেন সঙ্গীতা। সপ্তাহজুড়েই চলবে বিধানসভা অধিবেশন। সেই অধিবেশনে অংশ নেবেন নবনির্বাচিত বিধায়করাও। সঙ্গীতা জানিয়েছেন, এলাকায় ফিরে সাধারণ মানুষের সমস্যার কথা শুনব। একই কথা জানিয়েছেন জয়প্রকাশও। এদিকে, নতুন দুই বিধায়ককে ঘিরে প্রত্যাশা বাড়ছে মাদারিহাট ও সিতায়ের বাসিন্দাদের মধ্যে।
চব্বিশের লোকসভা ভোটে সিতাই বিধানসভায় ২৮ হাজার ভোটে এগিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। তিনটি পঞ্চায়েতে পিছিয়ে ছিল তারা। তবে উপ নির্বাচনে রেকর্ড স্থাপন হল। ১৭টি পঞ্চায়েতেই লিড পায় জোড়াফুল। ১ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন সঙ্গীতা রায়। সিতাই বিধানসভায় দমকল কেন্দ্র, কলেজ স্থাপনের দাবি রয়েছে। অনেক জায়গার স্বাস্থ্যকেন্দ্র ধুঁকছে। ভোট প্রচারে গিয়ে অনেকের কাছ থেকেই রাস্তাঘাট, সেতু, নদীবাঁধ সংস্কারের দাবির কথা শুনেছিলেন। এবার সেসব একেএকে গড়ার দিকে জোর দেবেন বলে জানিয়েছেন সঙ্গীতা। সংশ্লিষ্ট বিভাগের মন্ত্রীদের কাছে এলাকার উন্নয়নের জন্য হাজির হবেন তিনি।
এদিকে, বিধায়ক হিসেবে শপথ নেওয়ার আগে ও পরে দু’বারই জয়প্রকাশ টোপ্পো মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশীর্বাদ নেন। টেলিফোনে জয়প্রকাশ বলেন, শপথ নেওয়ার আগে বিধানসভার বাইরে মুখ্যমন্ত্রী আমাকে নাম ধরে ডেকেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীকে প্রণাম করেছি। শপথ নেওয়ার পর ফের আরও একবার প্রণাম করি। মুখ্যমন্ত্রী আশীর্বাদ করেছেন। মাদারিহাটের নয়া এমএলএ বলেন, বিধায়ক জীবনের ইনিংস শুরু হল। ছাব্বিশে বিধানসভা ভোট। স্বভাবতই আমার এমএলএ’র কার্যকালের মেয়াদ এমনিতেই কম। তারমধ্যেই মাদারিহাটের সার্বিক উন্নয়নের কাজে সবরকমভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ব। বিশেষ করে চা শ্রমিকরা আমাদের দু’হাত ভরে ভোট দিয়েছেন। সেই চা বাগানে আরও বেশি করে কীভাবে উন্নয়নমূলক কাজ করা যায় সেটাও খতিয়ে দেখতে হবে আমাকে।
সিতাই বিধানসভার গোসানিমারি নাগরিক মঞ্চের সহ সম্পাদক প্রদীপ ঝাঁ বলেন, গোসানিমারির পর্যটন প্রসারের প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন বিধায়কের কাছে আশা, পর্যটন মানচিত্রে গোসানিমারি নাম উজ্জ্বল করতে উনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। ওকরাবাড়ির শিক্ষক নবিউল ইসলাম বলেন, ওকরাবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে। এই এলাকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে নতুন বিধায়ক অগ্রণী ভূমিকা নেবেন বলে আশা করছি আমরা। টেলিফোনে বিধায়ক বলেন, মানুষের আশীর্বাদে জয়ী হয়েছি। শনিবার সিতাই ফিরব। এরপর প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে যাব। মানুষের সমস্যার কথা জানব। সমাধানের জন্য উদ্যোগ নেব।
২০১৬ সাল থেকে মাদারিহাট বিধানসভা আসনটি বিজেপির দখলে। একুশের ভোটেও মাদারিহাট সহ জেলার পাঁচটি বিধানসভায় তৃণমূল খাতাই খুলতে পারেনি। যদিও একুশের ভোটে বিজেপির টিকিটে জিতে পরবর্তীতে তৃণমূলে যোগ দেন আলিপুরদুয়ারের বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল। দলের জেলা চেয়ারম্যান গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, সরাসরি ভোটে বিজেপিকে হারিয়ে এই প্রথম আমরা দলের বিধায়ক পেয়েছি। ছাব্বিশে জেলায় ৫-০ ফল হবে।