• কোটি টাকা প্রতারণার মামলায় সস্ত্রীক বিজেপি নেতার পর গ্রেপ্তার আরও ১
    বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, তমলুক: ১ কোটি ৬০ লক্ষ টাকা প্রতারণা মামলায় সস্ত্রীক বিজেপি নেতা নবারুণ নায়েকের পর আরও একজন ধরা পড়ল। রবিবার রাতে উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম থেকে সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এফআইআরে তার নাম রয়েছে। জমিবাড়ির দালালির পাশাপাশি ধৃত সোমনাথ কমিশনের বদলে লোন পাইয়ে দেওয়ার কারবার করত। পুলিস জানিয়েছে, নবারুণ নায়েকের স্ত্রী তনুশ্রী রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবে কাজ করত সোমনাথ। গুয়াহাটির হোটেলে তনুশ্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ তিনজন উপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে সোমনাথ অন্যতম। সোমবার ধৃতকে তমলুক সিজেএম কোর্টে তোলা হলে বিচারক চার দিনের পুলিসি হেফাজতের নির্দেশ দেন।

    গত ১০অক্টোবর সস্ত্রীক নবারুণ সহ মোট ছ’জনের বিরুদ্ধে ১কোটি ৬০লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বিশ্বজিৎ দত্ত। কলকাতার হাইল্যান্ড পার্ক এলাকার ওই ঠিকাদারের অভিযোগ, অসম সরকারের সরকারি নথি জালিয়াতি করে ৪০কোটি টাকা টেন্ডার দেওয়ার নামে কমিশন বাবদ ১কোটি ৬০লক্ষ টাকা হাতানো হয়েছে। বিজেপির রাজ্য সম্পাদক নবারুণ নায়েক ও তাঁর স্ত্রী তনুশ্রী রায় এই ঘটনায় জড়িত। এই ঘটনায় তাঁরা আরও চারজনকে কাজে লাগিয়েছিল। তাদের মধ্যে মধ্যমগ্রামের সোমনাথ একজন। এজন্য তাকে দু’লক্ষ টাকা কমিশন দেওয়া হয়েছিল।

    রবিবার রাতে সোমনাথকে গ্রেপ্তার করে তমলুক থানায় আনা হয়। সোমবার সকালে তমলুকের এসডিপিও আফজল আব্রার থানায় পৌঁছন। পুলিসের একটি টিম সোমনাথকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করে। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তাকে তমলুক কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিস ভ্যানে তোলার সময় সোমনাথ বলে, ‘চুনোপুঁটিদের উপর দায় চাপিয়ে রাঘববোয়ালরা বাঁচবার চেষ্টা করছে। পুলিসকে সঠিক তদন্ত করতে হবে।’

    এদিকে, ছ’দিনের পুলিস হেফাজত শেষে আজ, মঙ্গলবার নবারুণ নায়েক ও তাঁর স্ত্রী তনুশ্রী রায়কে তমলুক সিজেএম কোর্টে পেশ করবে পুলিস। আর্থিক প্রতারণা ঘটনায় গ্রেপ্তার হতেই রাজ্য কমিটির সম্পাদক পদ থেকে ওই নেতাকে সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি। টানা পাঁচদিন তমলুক থানার পুলিস কাস্টডিতে রয়েছেন নবারুণ ও তাঁর স্ত্রী। এই সময়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে পার্টির একজনও না যাওয়ায় পুলিস কর্মীদের কাছে আক্ষেপ করেন নবারুণ। কারও সঙ্গে দেখা না হওয়ায় দাঁত মাজার ব্রাশ কেনার কথাও বলতে পারছেন না। অগত্যা আঙুল দিয়ে দাঁত মাজার কাজ সারতে হচ্ছে। নবারুণ তাঁদের বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার পর এমন দুর্দিন আসবে ভাবতে পারিনি।

    অভিযোগকারী বিশ্বজিৎ দত্ত বলেন, আমাকে ঠকিয়ে ১কোটি ৬০লক্ষ টাকা গায়েব করেছেন নবারুণ ও তাঁর স্ত্রী। এই কাজে সহযোগিতা করেছিল আরও চারজন। এত টাকা প্রতারণা করে ওরা বহাল তবিয়তে ছিল। অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে তমলুক থানার পুলিস। আই঩নের উপর পূর্ণ আস্থা আছে। আশা করি, সুবিচার পাব। 

    তমলুক থানার আইসি সুভাষচন্দ্র ঘোষ বলেন, মধ্যমগ্রাম থেকে সোমনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় নামে প্রতারণায় অভিযুক্ত আরও একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার চার দিনের পুলিস হেফাজত হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)