বাড়ি বাড়ি জল প্রকল্প: খেলাপি কেন্দ্রীয় ঠিকাদারদের জরিমানার নির্দেশ মমতার
বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নির্বাচন এলেই ‘জল জীবন মিশন’-এর কথা বলে বাংলার মানুষের ভোট চান প্রধানমন্ত্রী। অথচ তাঁদের বাড়িতে পানীয় জলের সংযোগে প্রধান বাধা কেন্দ্রের অধীন একাধিক ঠিকাদারি সংস্থা। দায়িত্ব নিয়েও তারা একাধিক এলাকায় জল পৌঁছে দিতে পারেনি, কাজের অগ্রগতি হতাশাজনক। এই বিষয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই খেলাপি ঠিকাদার সংস্থাগুলিকে জরিমানা করার নির্দেশ দিলেন। সোমবার বিধানসভায় এই জল প্রকল্পের উপর একটি পর্যালোচনা বৈঠক হয়। মন্ত্রিগোষ্ঠীর সদস্যদের পাশাপাশি শীর্ষ আধিকারিকদের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, খেলাপি ঠিকাদারি সংস্থাগুলিকে কালো তালিকাভুক্ত করার পর তাদের জরিমানা করতে হবে। বিষয়টি উত্থাপন করতে হবে মন্ত্রিসভার পরবর্তী বৈঠকে। বিডিওদেরও কাজে আপস না-করার কথা বলেছেন মমতা। তাঁর সাফ কথা, সাধারণ মানুষ যাতে খাবার জল পেতে পারে তার ব্যবস্থা করুন। কারও কথা শুনবেন না। আমি মানুষের ভাগে ভাগ বসাতে দেব না। মানুষের টাকা মানুষের কাজেই ব্যবহৃত হবে, সরকারি টাকা যেন কারও ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহৃত না-হয়।
সংযোগ পৌঁছনো বাড়িগুলিতেও জল না-যাওয়া নিয়ে, গত সপ্তাহের পর্যালোচনা বৈঠকে ক্ষোভ উগরে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর থেকেই এই সমস্ত পাইপ কেটে জল চুরির বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে অভিযানে নামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি (পিএইচই) দপ্তর। প্রায় ২০ হাজার জায়গায় পানীয় জল অপব্যবহারের অভিযোগ পেয়ে ব্যবস্থা নিয়েছে দপ্তর। এদিন বিভাগীয় মন্ত্রী পুলক রায় জানান, ইতিমধ্যেই ১৫০ জন ঠিকাদার ও ১৯ জন আধিকারিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে রেল, বর্ডার রোড অর্গানাইজেশন (বিআরও) এবং ডিভিসির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থার জমি দিয়ে পাইপ নিয়ে যাওয়ার অনুমতি না মেলায় ১০ লক্ষ বাড়িতে জলের সংযোগ যায়নি। এনিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন তিনি। এবিষয়ে কেন্দ্রকে চিঠি লেখার জন্য মুখ্যসচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শুধুমাত্র এই প্রকল্পেই রাজ্যের ৮ লক্ষ জব কার্ড হোল্ডারকে কাজ দেওয়া হয়েছে। ফলে পিএইচই প্রায় পাঁচ কোটি কর্মদিবস সৃষ্টি করতে পেরেছে, এটি একটি রেকর্ড। পরিবার পিছু বছরে গড়ে ৬১ দিন কাজ দিয়েছে রাজ্যের এই দপ্তর। পরিযায়ী শ্রমিকদেরও কাজে লাগানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।