• ব্যাঙ্কে মাসের পর মাস আটকে ফাইল, ঋণ না মেলায় সঙ্কটে আবেদনকারীরা
    বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বেসরকারি সংস্থার কাজ ছেড়ে ব্যবসা করবেন বলে ঠিক করেছিলেন কুলপির বিশ্বজিৎ মণ্ডল। ভেবেছিলেন আইসক্রিম কারখানা চালু করবেন। এর জন্য খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দপ্তরের অধীনে থাকা ‘প্রধানমন্ত্রী ফরমালাইজেশন অব মাইক্রো ফুড প্রসেসিং এন্টারপ্রাইজ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করেছিলেন ব্যাঙ্কে। তারপর কেটে গিয়েছে চার মাস। এখনও মঞ্জুর হয়নি ঋণ। ফলে কারখানা তৈরি তো দুরঅস্ত, সংসার চালাতেই এখন হিমশিম খাচ্ছেন বিশ্বজিৎবাবু। তাঁর কথায়, পুজোর আগে ব্যবসা চালু করার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু ব্যাঙ্কের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে তা আর হল না।


    কাকদ্বীপের বাসিন্দা আনন্দকুমার পাল তাঁর বাতাসা তৈরির কারখানাটি আড়েবহড়ে বাড়াতে চেয়ে গত জুন মাসে এই প্রকল্পের মাধ্যমে তিন লক্ষ টাকা ঋণের আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেই ঋণও মঞ্জুর হয়নি। ফলে উৎপাদন বাড়াতে না পারায় ক্রেতাদের অর্ডার থাকলেও সেই মতো দিয়ে উঠতে পারছেন না তিনি। আনন্দবাবু বলেন, ব্যাঙ্ক নিত্যনতুন একটি-দু’টি করে নথি জমা করতে বলছে। ফলে টালবাহানার কারণে সবটাই ঝুলে রয়েছে।


    এই প্রকল্পের মাধ্যমে যেসব মানুষ আবেদন করেছেন, তাঁরা এখন চাতক পাখির মতো ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পে তিনশোর কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছে। তার মধ্যে এখন শতাধিক ফর্ম ব্যাঙ্কের কাছে জমা রয়েছে। মাত্র চারজনের ঋণ মঞ্জুর করে টাকা ছেড়েছে ব্যাঙ্ক। বাকিদের নানা অছিলায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ। আরও বেশ কিছু আবেদন পরীক্ষার পর তা ব্যাঙ্কে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে জেলা খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিভাগ। কবে এইসব আবেদনে ব্যাঙ্ক সিলমোহর দেবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। এসবের ফলে চরম সমস্যায় আছেন আবেদনকারীরা।


    পাথরপ্রতিমা, কুলতলি সহ সুন্দরবনের প্রান্তিক এলাকার মানুষ এই প্রকল্পে সব থেকে বেশি আবেদন করেছেন। ব্যাঙ্কের তকফে এত গড়িমসি কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। জেলার আধিকারিকরা দফায় দফায় বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। কিন্তু তারপরও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে টালবাহানা লেগেই রয়েছে। জানা গিয়েছে, আবেদনকারীদের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট পর্যন্ত জমা করতে হয়েছে। আগে ঋণ নিয়ে থাকলে সেই ঋণ পরিশোধের কাগজপত্র ও এনওসি জমাও বলা হয়েছে। সব জমা করলেও ঋণ এখনও অধরা।
  • Link to this news (বর্তমান)