ভিন্রাজ্যে আলু পাঠানোয় প্রশাসনিক কড়াকড়ি শুরু হয়। রাজ্যের সীমানায় আলুবোঝাই গাড়ি আটকে দিয়েছে পুলিশ। ফলে অন্য রাজ্যে আলু পাঠাতে না পারায় ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন এ রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি জানিয়েছিল, এ বিষয়ে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ধর্মঘটের পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই সোমবার জট কাটাতে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি ও রাজ্যের হিমঘর মালিক সংগঠনকে নিয়ে খাদ্য ভবনে বৈঠক করেন বেচারাম। সরকারের তরফেও ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু আলু ব্যবসায়ীরা জানিয়ে দিয়েছেন, সীমানায় আলুর গাড়ি আটকানো বন্ধ না-হলে তাঁরাও ধর্মঘটের রাস্তা থেকে সরতে পারবেন না। ফলে মঙ্গলবার সকাল থেকেই আলুর দামে প্রভাব পড়ল রাজ্যের বিভিন্ন বাজারে।
মঙ্গলবার থেকে চড়া দামে আলু বিক্রি হচ্ছে বর্ধমানের বাজারে। পুলিশ লাইন বাজার থেকে স্টেশন বাজার কিংবা নীলপুর বাজার সব জায়গাতেই খোলা বাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬ টাকা কিলো দরে। চন্দ্রমুখী আলু কিলো প্রতি ৪০ টাকা। খুচরো বিক্রেতারা জানান, সোমবার পর্যন্ত তাঁরা আলু বিক্রি করেছেন ৩২ টাকায়। কিন্তু মঙ্গলবার আলুর জোগান কম। বস্তায় ২০০ টাকা বেশি দামে আলু কিনতে হচ্ছে। তাই দাম বৃদ্ধি করতে বাধ্য হয়েছেন তাঁরা।
পূর্ব বর্ধমানের প্রায় সব হিমঘরের গেটের বাইরেই তালা ঝুলছে। হিমঘর থেকে আলু না বার হওয়ায় বাজারে বাজারে জোগান কমেছে। রাজ্য প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির ডাকা কর্মবিরতিতে সহমত পোষণ করছে হিমঘর মালিক অ্যাসোসিয়েশন। পূর্ব বর্ধমান জেলা কমিটির সভাপতি উত্তম পাল বলেন, ‘‘মঙ্গলবার দুপুরে রাজ্য ব্যবসায়ী সমিতির বৈঠক হবে সমিতির অফিসে। সেখানেই পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’’
শুধু বর্ধমান নয়, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পূর্ব মেদিনীপুরেও একই ছবি। কলকাতার বাজারেও প্রভাব পড়েছে। সল্টলেকের দিকে জ্যোতি, চন্দ্রমুখী— প্রায় কেজি প্রতি তিন টাকা করে দুই জাতের আলুরই দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। যদি ধর্মঘট না ওঠে তবে আলুর দাম আরও বাড়তে পারে এমন আশঙ্কা করছেন অনেকেই। তবে জোগান ঠিক রাখতে সক্রিয় রাজ্য সরকার, মঙ্গলবার এমনই জানিয়েছেন বেচারাম। তিনি বলেন, ‘‘টানা বৃষ্টির জন্য নতুন আলুচাষ ১৫ দিন পিছিয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, যে নতুন আলু আমরা ডিসেম্বরের ২০ থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে বাজারে পেতাম, এ বার তা পেতে পেতে জানুয়ারি মাস। তাই পুরনো আলুর উপরই ভরসা করতে হবে। আমাদের রাজ্যে এখন যা আলু আছে, তা আগামী ৪০-৪৫ দিনের জন্য পর্যাপ্ত। তাই এই পরিস্থিতিতে আলু বাইরে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’