• আলু নিয়ে ‘দয়ালু’ সিঙ্গুর, টানা কর্মবিরতিতে নেই এখানকার ব্যবসায়ী সমিতি
    এই সময় | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪
  • আলু ব্যবসায়ীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, ফের কর্মবিরতির। বাজারে আলু সরবরাহ বন্ধের কথা বলেছেন মঙ্গলবার থেকেই। কৃষি বিপণন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে আলু ব্যবসায়ীদের বৈঠকেও জট কাটেনি। তবে, এই আবহে আশার খবরও শুনিয়েছে সিঙ্গুরের আলুর পাইকারি বাজারের ব্যবসায়ীরা। প্রতিবাদে সামিল হলেও বুধবার থেকে বাজার খোলা থাকবে বলে জানান সিঙ্গুর-রতনপুর আলু ব্যবসায়ী সমিতি। সংগঠনের সম্পাদক সুকুমার সামন্ত বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখে বাজার খোলা রাখতে হবে। না হলে অগ্নিমূল্য হয়ে যাবে আলু।’

    ভিন রাজ্যে আলু রপ্তানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা তোলার দাবিতে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি। চলতি বছরে দফায় দফায় কর্মবিরতির ডাক দেয় তারা। প্রশাসনের আশ্বাসে তখনকার মতো কর্মবিরতি উঠলেও সোমবার খাদ্যভবনে আলু ব্যবসায়ী, হিমঘর মালিকদের সঙ্গে রাজ্যের কৃষি বিপণন দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বেচারাম মান্নার বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। তার ফলে ফের মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে। প্রায় ২৫ হাজার আলু ব্যবসায়ী কর্মবিরতিতে সামিল হয়েছেন।

    সুকুমার সামন্ত জানান, পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতি অনির্দিষ্টকালের জন্য যে কর্মবিরতির ডাক দিয়েছে তাতে সংগঠনের সমর্থন রয়েছে। এক দিনের প্রতীকী বনধ্ও পালন করছেন তাঁরা। সিঙ্গুরে সকলেই বনধ্ পালন করছেন। কিন্তু বুধবার থেকে পুরোনো ছবি দেখা যাবে রাজ্যের অন্যতম বড় আলুর পাইকারি বাজারে।

    কী ভাবে?

    সুকুমার সামন্তের কথায়, ‘আমরা লাগাতার ধর্মঘটে নেই। রাজ্য কমিটির মিটিংয়ে কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে আমরা জানিয়েছিলাম টানা হরতালে আমরা যেতে পারবো না।’ মঙ্গলবার সিঙ্গুরের ২২০ জন আলু ব্যবসায়ী বনধে সামিল হয়েছেন বলে জানান তিনি। তবে এমনটা রোজ সম্ভব নয়। এই বাজার থেকেই দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া, হাওড়া, কলকাতার বিভিন্ন বাজারে আলু যায়।

    ইতিমধ্যেই আলুর দাম বাড়তে শুরু করেছে। পাইকারি বাজারে ৫০ কেজির আলুর বস্তা ১০০ থেকে ১৫০ টাকা অবধি দাম বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের। ফলে খোলা বাজারেও ইতিমধ্যেই ৩ টাকা করে বেড়েছে আলুর দাম। কোথাও কেজি প্রতি আলুর দাম ৩৬ টাকা, কোথাও ৩৮ টাকা, কোথাও ৪০টাকা।

    সিঙ্গুর বাজারের খুচরো আলু বিক্রেতা অমিত কোলের দাবি, যে হারে আলুর দাম বৃদ্ধি পেয়েছে তাতে জ্যোতি আলু ৩৫ টাকা, চন্দ্রমুখী আলু প্রায় ৪০ টাকা দরে বিক্রি করতে হবে। না হলে কোনও লাভই থাকবে না। তিনি জানান, সোমবার থেকেই আলু আনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

    পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লালু মুখোপাধ্যায় জানান, সোমবারের মিটিংয়ে রফাসূত্র না বেরোনোয় মঙ্গলবার থেকে কর্মবিরতিতে সামিল হতে হয়েছে। তাঁর বক্তব্য, বাইরের রাজ্যে আলু যাচ্ছে না। সীমানাগুলিতে নজরদারি বাড়ায় বহু জায়গায় আলুবোঝাই গাড়ি আটকানো হচ্ছে।

    তবে আলু ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতি নিয়ে মন্ত্রী বেচারাম মান্নার বক্তব্য, এই মুহূর্তে রাজ্যের কোনও কৃষকের কাছে আলু মজুত নেই। কোনও খুচরো আড়তদারের কাছে আলু মজুত নেই। মন্ত্রীর দাবি, ৪০ জন স্টোর মালিক এবং বড় ব্যবসায়ীর কাছে আলু চলে গিয়েছে। সেই নামের তালিকাও তাঁদের হাতে এসেছে। প্রয়োজনে সরকার কড়া পদক্ষেপও করতে পারে।
  • Link to this news (এই সময়)