• শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজে ইডির অভিযান
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: রাজ্যের বিভিন্ন বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজের পাশাপাশি মঙ্গলবার সাত সকালে শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজেও হানা দিল আর্থিক সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এই ঘটনা জানাজানি হতেই চাঞ্চল্য ছড়াল বোলপুর শহরে। এদিন সকালে প্রচুর কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে তদন্তকারীরা বোলপুর-শ্রীনিকেতন ব্লকের মুলুক এলাকায় বিশাল জায়গা জুড়ে থাকা শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাসে পৌঁছন। সূত্রের খবর, এই কলেজেও এমবিবিএস কোর্সে এনআরআই কোটায় জাল নথি দিয়ে পড়ুয়া ভর্তির দুর্নীতির যোগ রয়েছে। সেই কারণেই এ দিনের অভিযান‌ বলে জানা গিয়েছে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত  অভিযান চালান ইডির আধিকারিকরা।‌ অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে কলেজ ক্যাম্পাসে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। যদিও শান্তিনিকেতন মেডিকেল কলেজের কর্ণধার মলয় পিটের দাবি, কোনও দুর্নীতির সঙ্গেই তাঁর কলেজ যুক্ত নয়। তল্লাশি চলার পাশাপাশি এ দিন ক্যাম্পাসে পড়ুয়াদের ক্লাস প্রতিদিনের মতো স্বাভাবিক হয়েছে।


    মেডিক্যাল কলেজে এনআরআই কোটায় জাল নথি দিয়ে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তির দুর্নীতির বিষয়টি সম্প্রতি সামনে আসে। তার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সাত সকালে রাজ্যের প্রায় ২০টি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে হানা দেয় ইডি। জানা গিয়েছে, এদিন দুর্গাপুরের মলানদীঘি, শোভাপুর ও রাজবাঁধ এলাকার তিনটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ইডি অভিযান চালায়। এমনকী, একই কারণে হলদিয়ায় লক্ষণ শেঠের নতুন বাড়িতেও তল্লাশি অভিযান চালায় ইডির দল। এর পাশাপাশি বোলপুরের শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজেও হানা দেন তদন্তকারীদের আর একটি দল।


    তাৎপর্যপূর্ণভাবে, এই মেডিক্যাল কলেজে তদন্তকারী সংস্থার হানা এই প্রথম নয়। এর আগেও গোরু পাচার মামলায় একাধিকবার সংশ্লিষ্ট কলেজে হানার পাশাপাশি কলেজের কর্ণধার মলয় পিটকেও কলকাতা ও শান্তিনিকেতনের অস্থায়ী সিবিআই ক্যাম্পে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কারণ, গোরু পাচার মামলায় তদন্তে নেমে সিবিআই অনুব্রত‌ মন্ডলের সঙ্গে মলয় পিটের ঘনিষ্ঠতার কথা জানতে পারে।‌ তদন্তকারীদের ধারণা, গোরু পাচারের প্রায় ১০০ কোটি টাকা এই কলেজে লগ্নি করা হয়েছে। প্রায় ১০০ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠেছে কলেজের ক্যাম্পাস। রয়েছে বিশাল বিশাল বিল্ডিং। ‌বর্তমানে এই কলেজে এমবিবিএস কোর্সে ছাত্র-ছাত্রী সংখ্যা প্রায় ৬০০ জন। পঠন-পাঠনের মাঝে এদিন সকাল ৮টা ১৫ নাগাদ ইডির তিনটি গাড়ি পৌঁছয় ওই কলেজে। প্রথমে ব্লক ওয়ান বিল্ডিংয়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। যদিও কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি এনআরআই কোটায় এখনও কোনও পড়ুয়াই ভর্তি হননি। সেখানে জাল নথির প্রশ্নই আসে না। শান্তিনিকেতন মেডিক্যাল কলেজের কর্ণধার তথা সভাপতি মলয় পিট একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, এমবিবিএসে ভর্তির কোনও অনিয়ম আমার কলেজে হয়নি। ন্যাশনাল মেডিক্যাল কাউন্সিলের নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ২০২১ সালে কলেজ খোলার সময় থেকে আজ পর্যন্ত এমবিবিএসের কোনও ব্যাচে এনআরআই কোটায় কোনও ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি হননি। তাই এই বিষয়ে দুর্নীতির কোনও প্রশ্নই নেই। 
  • Link to this news (বর্তমান)