• হাতে স্টিয়ারিং, কানে মোবাইল, চালকের ভুলেই খাদে পড়ে বাস
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: হাতে বাসের স্টিয়ারিং। কানে মোবাইল ফোন! রংপোর পাহাড়ি রাস্তায় এভাবে বাস চালাতে গিয়েই ঘটে সেই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঘটনার দু’দিন পর মঙ্গলবার অভিশপ্ত সেই বাসচালকের বিরুদ্ধে এমনই তথ্য পেয়েছে কালিম্পং পুলিস। তাদের ধারণা, চালকের গাফিলতিতেই সেই বাস পড়ে যায় তিস্তা নদীর খাদে। একইসঙ্গে সেই বাসের ফিটনেস নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে পুলিস। তারা বাসটি পরীক্ষা করার জন্য পরিবহণ দপ্তরের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে। 


    মর্মান্তিক ওই বাস দুর্ঘটনার কারণ নিয়ে তদন্তে নেমেছে কালিম্পং জেলা পুলিস। তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা, বাসের আহত যাত্রীদের বয়ান নিয়েছে। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীও রয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে ঘটনাটি নিয়ে পুলিস চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য হাতে পেয়েছে। কালিম্পংয়ের পুলিস সুপার শ্রীহরি পাণ্ডে বলেন, এক প্রত্যক্ষদর্শী মিলেছে। তাঁর বয়ান অনুসারে মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে বাস চালাচ্ছিলেন চালক। সেজন্য বাস চালকের গাফিলতিতেই সেই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে। 


    সেই দুর্ঘটনায় বাসের চালকও গুরুতর আহত। তিনি বর্তমানে সিকিমের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর উপর পুলিস নজর রেখেছে। পুলিস সুপার বলেন, চিকিৎসাধীন হওয়ায় বাসচালককে জেরা করা সম্ভব হয়নি। চালকের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক অনুমতি দিলেই চালককে জেরা করা হবে। 


    প্রসঙ্গত, গত শনিবার সিকিমগামী ১০ নম্বর জাতীয় সড়কের রংপোর আন্ধেরী এলাকায় একটি বেসরকারি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রায় ১৫০ ফুট নীচে পড়ে যায়। ঘটনায় সাতজন যাত্রীর মৃত্যু হয়। আহত হন ১৪ জন। তাঁদের মধ্যে এখনও কয়েকজন যাত্রী চিকিৎসাধীন। নিহত ও আহত যাত্রীদের মধ্যে শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, কলকাতা ও সিকিমের বাসিন্দা ছিলেন। শুধু চালকের গাফিলতি নয়, সংশ্লিষ্ট বাসের ফিটনেস নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। ওই বাস দীর্ঘদিনের পুরনো। সেটির ইঞ্জিন সহ যন্ত্রাংশেও ত্রুটি রয়েছে বলে পুলিসের প্রাথমিক অনুমান। 


    পুলিস সূত্রের খবর, দুর্ঘটনার কবলে পড়া ওই বাসটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। সেটির ফিটনেস পরীক্ষা করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পুলিস সুপার বলেন, বাসটি সার্বিকভাবে পরীক্ষা করা হবে। পরিবহণ দপ্তরের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।
  • Link to this news (বর্তমান)