• ধর্মঘট না হলেও বাজারে আলু কিনতে হাতে ছ্যাঁকা
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: দক্ষিণবঙ্গে আলু ব্যবসায়ীরা ধর্মঘটে নেমেছেন। কিন্তু উত্তরে ধর্মঘট না হলেও বাজারে আলু কিনতে গিয়ে ছ্যাঁকা লাগছে হাতে। কখনও খোদ মহকুমা শাসক, কখনও আবার কৃষি বিপণন দপ্তরের আধিকারিকরা হানা দিচ্ছেন বাজারে। কিন্তু তার পরও আলুর দামে বিন্দুমাত্র সুরাহা মিলছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। শিলিগুড়ি থেকে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার আলিপুরদুয়ার সর্বত্রই ছবিটা একই।


    মঙ্গলবারও জলপাইগুড়ির দিনবাজারে জ্যোতি আলু বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকা কেজি। আকারে ছোট এবং খানিকটা খারাপ মানের জ্যোতি আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকায়। ক্রেতাদের অভিযোগ, জিজ্ঞেস করলেই বিক্রেতারা ঝাঁঝিয়ে উত্তর দিচ্ছেন, দক্ষিণবঙ্গে আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘট চলছে। দাম তো বাড়বেই। ৫০ টাকাও ছুঁতে পারে আলুর দাম। যদিও দক্ষিণবঙ্গে আলু ব্যবসায়ীদের ধর্মঘটের সঙ্গে উত্তরের বাজারে আলুর দাম বৃদ্ধির কোনও সম্পর্ক নেই বলে জানাচ্ছে আলু ব্যবসায়ী সমিতি। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাজারে কেন জ্যোতি আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন ক্রেতারা। প্রশাসনও অবশ্য এর সদুত্তর দিতে পারছে না।


    উত্তরবঙ্গ আলু ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাবলু চৌধুরী বলেন, দক্ষিণবঙ্গে ধর্মঘট হলেও আমরা সেপথে হাঁটছি না। তাছাড়া হিমঘর মালিকদের সঙ্গে আমাদের এ ব্যাপারে কোনও আলোচনাও হয়নি। হিমঘর মালিক সমিতির উত্তরবঙ্গের সম্পাদক মনোজ সাহার বক্তব্য, উত্তরে ধর্মঘট হবে কেন, এখানে তো হিমঘরে তেমন আলুই নেই।


    দিন কয়েক আগেই জলপাইগুড়ির জেলাশাসক শমা পারভীন আলু ব্যবসায়ী এবং হিমঘর মালিকদের নিয়ে বৈঠক করে সাফ জানিয়ে দেন, ২৫ টাকা কেজি দরে সুফল বাংলায় আলু বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া জেলার সর্বত্র ফেয়ার প্রাইস শপ খুলে ২৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে হবে। জেলাশাসকের নির্দেশের পর জলপাইগুড়ি শহরে দু’টি স্টল খুলে ২৮ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করা হয়। কিন্তু দু’দিন যেতে না যেতেই সেই স্টল চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।


    জলপাইগুড়ি সদরের মহকুমা শাসক তমোজিৎ চক্রবর্তী বলেন, আমি নিয়মিত বাজারে হানা দিচ্ছি। কৃষি বিপণন দপ্তরকেও সব্জির দামের উপর নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। ৪০ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু বিক্রির অভিযোগ নিয়ে মহকুমা শাসকের দাবি, মঙ্গলবার এনিয়ে একটি ভিডিও পাই। সঙ্গে সঙ্গে কৃষি বিপণন দপ্তরকে বাজারে গিয়ে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।


    জলপাইগুড়ির সহকারী কৃষি বিপণন আধিকারিক দেবাঞ্জন পালিতের দাবি, এদিন আধিকারিকদের দিনবাজারে পাঠানো হয়েছিল। যে বিক্রেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি দাবি করেছেন, লাল আলু ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জ্যোতি আলুর কেজি ৩৫ টাকা। পাঞ্জাবের আলু বিকোচ্ছে ৫০ টাকা। ভুটানের আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা। নতুন আলু ৫০ টাকা কেজি।


    হিমঘর সূত্রে খবর, শুকনো করার পর ২২-২৩ টাকা কেজি দরে আলু বেরচ্ছে। ফলে তা কখনওই খুচরো বাজারে ২৮ টাকার বেশি দামে বিক্রি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সেই আলু কোথাও ৩৫, কোথাও ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি নিয়ে ফাটকাবাজির অভিযোগও সামনে আসছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)