ময়নাগুড়িতে দাঁড়িয়ে থাকা লরির পিছনে ধাক্কা পিকআপ ভ্যানের, মৃত ৩
বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
সংবাদদাতা, ময়নাগুড়ি: ময়নাগুড়ির অসম মোড় সংলগ্ন ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার ভোরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে হাইওয়ে ট্রাফিক পুলিস ও ময়নাগুড়ি থানা পুলিস ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তিনজনকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে। কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিস জানিয়েছে, মৃতরা সকলেই পিকআপ ভ্যানে ছিলেন। দুর্ঘটনাটি ঘটেছে একটি দূরপাল্লার লরির সঙ্গে। মৃতরা হলেন, পবিত্র পাহান (১৯), অগাস্টিন বাচরা (২৩) ও অমিত টুডু (২৮)। এঁদের মধ্যে পবিত্রর বাড়ি শিলিগুড়ি মহকুমার বিধাননগরে। বাকি দু’জনের বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের চোপড়ায়। দেহ তিনটি ময়নাতদন্তে জন্য জলপাইগুড়ি পাঠিয়ে তদন্তে নামে পুলিস। দু’টি গাড়িই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিস জানিয়েছে, লরি চালককে আটক করা হয়েছে।
স্থানীয় ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পিকআপ ভ্যানটি সব্জি নিয়ে শিলিগুড়ির দিক থেকে ধূপগুড়ির দিকে যাচ্ছিল। ময়নাগুড়ির ইন্দিরা মোড় সংলগ্ন পেট্রল পাম্পের সামনে একটি লরি দাঁড়িয়েছিল। প্রচণ্ড গতিতে এসে পিকআপ ভ্যানটি লরির পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। এতে পিকআপ ভ্যানের সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। ভোরে আচমকাই বিকট আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়রা ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। জখমদের তাঁরাই উদ্ধার করে পুলিসের সহযোগিতায় হাসপাতালে পাঠান।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরে ময়নাগুড়ি আসেন মৃত অমিত টুডুর ভাই বৈদ্যনাথ টুডু। তিনি বলেন, দাদা সব্জির ব্যবসা করতেন। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন পবিত্র। সঙ্গে ছিল অগাস্টিন। ওঁরা তিনজনই সব্জি নিয়ে ধূপগুড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। তিন মাস হল গাড়িটি কিনেছি। ব্যবসার জন্যই কেনা হয়েছিল। এভাবে গাড়িটি দাদার প্রাণ কেড়ে নেবে ভাবতেই পারছি না। বাড়িতে কাউকে জানানো হয়নি।
হাইওয়ে ট্রাফিক ওসি স্বপন বর্মন বলেন, লরিটি অন্ধ্রপ্রদেশের নম্বরের। আমরা প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছি, রাস্তার একেবারেই পাশে লরি দাঁড় করিয়ে চালক শৌচকাজ করতে যান। পিকআপ ভ্যানটি প্রচণ্ড গতিতে এসে লরির পিছনে ধাক্কা মারে।
ঘটনাটি ময়নাগুড়ি শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড সংলগ্ন বাইপাসে। ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সুপ্রিয় দাস বলেন, সারা রাত গাড়ি চালানোয় ভোরেরদিকে অনেক চালকেরই ঝিমুনি আসে। দুর্ঘটনার এটাও কারণ হতে পারে। কুয়াশার সময় আসছে। তাই চালকদের সতর্ক থাকা উচিত। যদিও পুলিস প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শীতের মরশুমে জাতীয় সড়কে গাড়ি দাঁড় করিয়ে চালকদের চোখে-মুখে জল দিতে বলার পাশাপাশি গরম চা খাওয়ানো শুরু হয়েছে।