• জঞ্জালে ঢেকেছে চুঁচুড়া, অস্থায়ী বয়স্ক কর্মীদের  ছাঁটাইয়ের ভাবনাকে ঘিরে নতুন দ্বন্দ্বের ইঙ্গিত
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: চুঁচুড়া পুরসভার অস্থায়ী কর্মীদের কর্মবিরতির জেরে মঙ্গলবারও সাফাইকাজ বন্ধ রইল শহরে। রবিবার থেকেই সাফাই ও জঞ্জাল অপসারণের কাজ বন্ধ রেখেছেন কর্মীরা। ফলে, শহরের সর্বত্র উপচে পড়ছে ভ্যাট। আবর্জনা ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তাঘাটে। গোটা শহর কার্যত নরকের চেহারা নিয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াতে শুরু করেছে। গৃহস্থের বাড়িতেও জমছে আবর্জনা। এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতি গোটা চুঁচুড়ায়। সাফাইকর্মীরা না আসায় কোথাও কোথাও বাড়ির সামনে কিংবা রাস্তার পাশেই আবর্জনা ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন বাসিন্দারা। তাতে শহরের প্রায় প্রতিটি পাড়ায় ছোট ছোট ভ্যাট তৈরি হয়েছে। এই ঘটনায় পুরসভাকেই ‘কাঠগড়া’য় তুলেছেন বাসিন্দারা।


    চুঁচুড়া পুরসভায় অস্থায়ী কর্মীর সংখ্যা অনেক। এই ‘অতিরিক্ত’ চাপ কমাতে পুর কর্তৃপক্ষ পঁয়ষট্টি ঊর্ধ্ব অস্থায়ী কর্মীদের চিহ্নিত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে। প্রাথমিকভাবে পুরকর্তাদের অনুমান, ওই তালিকায় অন্তত আড়াইশো জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। এই বিপুল সংখ্যক কর্মী বসে গেলে ভাতা বাবদ খরচ অনেকটাই কমে যাবে। পুরকর্তাদের এই পরিকল্পনা ঘিরে কর্মিমহলে তীব্র অসন্তোষ ছড়িয়েছে। এমনিতেই বকেয়া ভাতা নিয়ে বিবাদ চলছে। তার উপর ‘ছাঁটাই’য়ের পরিকল্পনা আগুনে ঘি ঢেলেছে। সব মিলিয়ে চুঁচুড়া পুরসভার নাগরিক পরিষেবা স্বাভাবিক হওয়ার কোনও ইঙ্গিত ৭২ ঘণ্টা পরেও মেলেনি।


    এ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মচারী সমিতির নেতা অসীম অধিকারী বলেন, আমরা প্রশাসনের ভূমিকার দিকে তাকিয়ে আছি। মাসের পর মাস বিনা পয়সায় পরিষেবা দেওয়া যায় না। ৬৫ বছরের বেশি বয়সি কর্মীদের কাজ থেকে সরাতে হলে এককালীন তিন থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা দিতে হবে। সেই দাবি না মানলে কর্মী ছাঁটাই করতে দেব না। এ নিয়ে পুরসভার চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রবীণ নেতা অমিত রায় বলেন, পুরসভার গার্ডদের ভাতার টাকা বৃহস্পতিবারের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে। সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক সময়ে অপ্রয়োজনীয়ভাবে অতিরিক্ত অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ করা হয়েছিল। আমরা প্রবীণদের অব্যাহতি দিয়ে ভাতা বাবদ খরচের বোঝা কমাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা করতে দেওয়া হয়নি। বাংলার কোনও পুরসভায় অস্থায়ী কর্মীদের অবসরের পর এককালীন টাকা দেওয়ার নিয়ম নেই। নাগরিকদের পরিষেবা বন্ধ রেখে পুর প্রশাসনকে কালিমালিপ্ত করার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, চুঁচুড়া পুরসভার সমস্যা মেটাতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীদের এই বিষয়টি জানিয়ে পরিষেবা স্বাভাবিক করার আবেদন জানানো হয়েছে।


    দফায় দফায় কর্মী আন্দোলনের জেরে আখেরে সমস্যায় পড়েছেন চুঁচুড়ার বাসিন্দারা। শহর সাফাই যেমন হচ্ছে না, তেমনই মঙ্গলবার পুরসভা থেকে মেলেনি পরিষেবা। যদিও দিনভর কর্মী বিক্ষোভে সরগরম ছিল পুরভবন। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)