বিজেপির সাংসদ শমীক ওই বিষয়ে মোট চারটি প্রশ্ন জমা দিয়েছিলেন সংসদে। তিনি জানতে চান, ২০১৯ থেকে ২০২৪— এই পাঁচ বছরে কত সংস্থা ঠিকানা বদলে বাংলা ছেড়ে অন্য রাজ্যে গিয়েছে? এর মধ্যে শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত কতগুলি সংস্থা এবং সেগুলি কোন কোন ক্ষেত্রের? তৃতীয় প্রশ্ন ছিল, ওই সংস্থাগুলি পশ্চিমবঙ্গ থেকে সদর দফতর সরিয়ে নেওয়ার কারণ হিসাবে কী কী জানিয়েছে? চতুর্থ প্রশ্নে শমীক জানতে চেয়েছিলেন, এ বিষয়ে মন্ত্রক কী কী পদক্ষেপ করেছে, যাতে পশ্চিমবঙ্গে শিল্প সংস্থাকে নিয়ে আসা যায়।
সব প্রশ্নেরই জবাব দিয়েছেন কর্পোরেট বিষয় মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হর্ষ মলহোত্র। প্রথম দু’টি প্রশ্নের উত্তরে সংখ্যায় হিসাব দিলেও মন্ত্রী শেষ দু’টির ক্ষেত্রে সে ভাবে জবাব দেননি। তিনি লিখিত বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ভারতের কোম্পানি আইনের ১৩(৪) ধারা অনুযায়ী যে কোনও সংস্থাই তাদের ঠিকানা এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিয়ে যেতে পারে। কী কী কারণে ‘স্থানান্তর’, তা জানিয়ে মন্ত্রীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক থেকে কাজের সুবিধা-অসুবিধার জন্য অনেক ঠিকানা বদল হয়েছে। এ ছাড়াও যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিচালন খরচ এবং পরিচালনার সুবিধার মতো কারণও দেখিয়েছে অনেক সংস্থা।
ওই তথ্য হাতে পেয়ে শমীক রাজ্য সরকারের উদ্যোগে অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন নিয়ে ‘কটাক্ষ’ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘এই রাজ্যে সরকারি খরচে ঢাকঢোল পিটিয়ে গ্লোবাল বিজ়নেস সামিট হয়। কিন্তু কোনও সংস্থা টিকে থাকে না। এটা আমরা অনেক দিন ধরেই বলছি। এ বার কেন্দ্রের রিপোর্টে সেটা সত্য বলে জানা গেল।’’ এত বেসরকারি সংস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজ্যে বেকারত্ব বাড়ছে এবং নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হচ্ছে না বলেও আক্রমণ করেছেন শমীক। তিনি বলেন, ‘‘গোটা দেশেই যখন উন্নয়নের জোয়ার, নতুন নতুন বিনিয়োগ আসছে, তখন বাংলায় কাজের পরিবেশ না থাকায় একের পর এক সংস্থা রাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে।’’ যদিও এই দাবি এবং কেন্দ্রের রিপোর্টকে কোনও গুরুত্ব দিতে রাজি নয় শাসক তৃণমূল। দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘এটা একটা গাঁজাখুরি রিপোর্ট। করোনার সময়ে সারা দেশেই এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তার পরবর্তী কালে বাংলায় কার্যকরী বিনিয়োগ বেড়েছে এবং কর্মসংস্থানও তৈরি হয়েছে।’’