• পার্কে বসছে অত্যাধুনিক টেলিস্কোপ, সুদূর গ্রহ-নক্ষত্র এক লহমায় কাছে
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • সংবাদদাতা, হলদিয়া: শীতে বেড়ানোর মরশুমে স্কুল পড়ুয়া ও পর্যটকদের দু›টি নতুন উপহার দিচ্ছে হলদিয়া পুরসভা। সতীশচন্দ্র সামন্ত পার্কে বসানো হচ্ছে কম্পুটারাইজড টেলিস্কোপ। হলদিয়ায় বেড়াতে এসে পর্যটকরা রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণের সুযোগ পাবেন। বন্দর শহর এবং তার লাগোয়া গ্রামাঞ্চলের স্কুল কলেজের পড়ুয়াদেরও মহাকাশ চর্চার দিগন্ত খুলে যাবে। পাশাপাশি টাউনশিপে হলদি নদীর তীর সৌন্দর্যায়নে তৈরি হচ্ছে ওয়েস্ট মেটিরিয়াল আর্ট অ্যান্ড ক্রাফ্ট পার্ক। পুরসভার বিভিন্ন গোডাউনে পড়ে থাকা স্ক্র্যাপ মেটিরিয়াল ওই শিল্পকলা উদ্যান তৈরির কাজে লাগানো হচ্ছে। এই দুই উদ্যোগ বিনোদনের সঙ্গে সামাজিক চেতনা বাড়ানো এবং শিক্ষার কাজেও লাগবে বলে মনে করছে পুর কর্তৃপক্ষ। এছাড়া শীতের মরশুমে পুর এলাকার ১০-১২টি পার্ক নতুন করে সাজিয়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। আবাসন সংলগ্ন পার্কগুলিতে শীতকালে শনি ও রবিবার স্থানীয় শিল্পীদের নিয়ে নিয়মিত অনুষ্ঠান আয়োজন করার চিন্তাভাবনা করছে পুরসভা। টাউনশিপের নদী ঘাটগুলিকেও আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


    হলদিয়ায় বেড়াতে এলে পর্যটকরা নদী তীরে পার্কে বসে উপভোগ করেন বন্দরে জাহাজ আনাগোনার দৃশ্য। কখনও যুদ্ধ জাহাজ, স্বয়ংক্রিয় কামান লাগানো টহলদারি জাহাজ, নানা ধরনের বিদেশি পণ্যবাহী জাহাজ, উভচর যান বা হোভারক্রাফটের মহড়া দেখার অভিজ্ঞতা অনন্য। এজন্য হলদিয়া পুরসভার বিদ্যাসাগর পার্ক পর্যটকদের কাছে খুবই আকর্ষণীয়। এবার টেলিস্কোপের জন্য শহরের বাসিন্দা ও পর্যটকদের কাছে নয়া ডেস্টিনেশন হতে চলেছে টাউনশিপ সংলগ্ন হাতিবেড়িয়ার সতীশচন্দ্র সামন্ত পার্ক। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, রাজ্যে প্রথম কোনও পার্কে এত শক্তিশালী ও বড়মাপের টেলিস্কোপ বসছে। এটি অত্যাধুনিক কম্পিউটারাইজড টেলিস্কোপ। ওই টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণের জন্য টেলিস্কোপের খুঁটিনাটি জানার প্রয়োজন নেই। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে কম্পিউটারই সে কাজ করে দেবে। ফলে সহজেই এটি ব্যবহার ও নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। ওই টেলিস্কোপে জিপিএস সিস্টেম লাগানো থাকবে এবং গ্রহ-নক্ষত্র দেখার জন্য সহজে অ্যালাইনমেন্ট বা দিগনির্দেশ করতে পারবে। যে কোনও পড়ুয়া বা সাধারণ মানুষ টেলিস্কোপের মাধ্যমে চাঁদের ভূপ্রকৃতি, মঙ্গলগ্রহ বা সৌরজগত কিংবা দূরের কোনও গ্রহ নক্ষত্র সহজেই দেখতে পারবেন। 


    হলদিয়ার মহকুমা শাসক ও পুর প্রশাসক সুপ্রভাত চট্টোপাধ্যায় বলেন, প্রায় সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা খরচে নতুন টেলিস্কোপ আনা হচ্ছে। এজন্য একটি শিল্প সংস্থার সহায়তা চেয়েছে পুরসভা। ওই সংস্থা তাদের সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচিতে ওই অর্থ খরচ করবে। সতীশচন্দ্র সামন্ত পার্কে প্রবেশের মুখে স্টিলের লুকআউট টাওয়ার তৈরি করে ওই টেলিস্কোপ বসানো হচ্ছে। এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বেঙ্গালুরুর একটি সংস্থাকে। 


    ওই টেলিস্কোপের সাহায্যে শুধু আকাশ পর্যবেক্ষণ নয়, অ্যাস্ট্রো ফোটোগ্রাফি কিংবা সৌরজগতের ভিতরে ও বাইরেও ছবি তোলাও সম্ভব। সন্ধে নাগাদ এক-দেড় ঘণ্টা আকাশ দেখানোর ব্যবস্থা করবে পুরসভা। পুর এলাকার স্কুল কলেজগুলিকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। পুর আধিকারিক দুলাল সরকার বলেন, পুরসভা চত্বরে এবং পুরসভার বিভিন্ন গোডাউন ও স্ক্র্যাপ ইয়ার্ডে নষ্ট হওয়া বিভিন্ন গাড়ি, লোহালক্কড় ও প্লাস্টিক মেটিরিয়ালের পাহাড় জমছে। এনিয়ে চিন্তা বাড়ছিল পুরসভার। এর একাংশ শিল্পকলার কাজে লাগিয়ে পুরসভা পরিবেশ বান্ধব বার্তা দিতে চাইছে। শিল্পী শোভন দাসকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বড়দিনের আগেই স্ক্র্যাপ মেটিরিয়াল শিল্প উদ্যানের সূচনা হবে।
  • Link to this news (বর্তমান)