• অরোরা খাল সংস্কার ও কংক্রিটের সেতু-স্লুইস গেট তৈরির কাজ শুরু
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আরামবাগ: দীর্ঘদিনের দাবিপূরণ হতে চলেছে খানাকুলবাসীর। অরোরা খালের উপর শসাখালিতে নতুন কংক্রিটের সেতু ও স্লুইস গেট তৈরির কাজ শুরু হল। তারসঙ্গে খালের ১২ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের কাজও শুরু করা হয়েছে। সম্প্রতি সেচদপ্তর এই কাজগুলি শুরু করেছে। তাতেই খুশি এলাকার বাসিন্দারা। সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ন’কোটি টাকা খরচে স্লুইস গেট ও সেতুর কাজ হবে। আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজে খাল সংস্কার হচ্ছে। আগামী এক বছরের মধ্যে কাজ শেষের সময়সীমাও দেওয়া হয়েছে। ফলে বন্যার সময় বাসিন্দাদের যাতায়াত সহ জলমগ্ন হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি থেকে অনেকটাই নিস্তার মিলবে বলে মনে করছেন সেচদপ্তরের আধিকারিকরা। 


    সেচদপ্তরের হুগলির এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার দেবেন্দ্র সিংহ বলেন, রূপনারায়ণ নদ থেকে প্রায় ১৫০ মিটার দূরে অরোরা খালের উপর স্লুইস গেট  নির্মাণ হচ্ছে। তাতে প্রায় ১৪টি গেট হবে। এরফলে বর্ষার সময় খালের জল রূপনারায়ণে মিশবে। কিন্তু, সেখান থেকে খালের ফিরে আসবে না। তাছাড়া খালের জলেই রবি মরশুমের সেচ সম্ভব হবে।  তারসঙ্গে খালটির উপরে থাকা সেতুও হচ্ছে। খালের দু’পাশ যন্ত্রের সাহায্যে কাটা হচ্ছে। এরফলে খালটিতে জল ধারণ ক্ষমতাও অনেকটাই বাড়বে। 


    ঘোড়াদহর চাষি নারায়ণ বেরা, সমর মাইতি বলেন, যোগাযোগের পাশাপাশি আমরা সমস্যায় পড়ি চাষ নিয়ে। বর্ষার সময় বন্যায় আমন ধান নষ্ট হয়ে যায়। আবার রবি মরশুমের ধান সহ অন্যান্য সব্জি চাষ করতে সেচের জল পাওয়া যায় না। স্লুইস গেট হলে সেই সমস্যা মিটবে। তারসঙ্গে খালের উপর আর বোরো বাঁধ দিতেও হবে না। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সেতু ও স্লুইস গেটের দাবি জানিয়ে আসছি। অবশেষে সেই দাবি মিটতে চলেছে। কাজটি যাতে ভালোভাবে হয়, সেই দিকে প্রশাসনের নজর যেন থাকে।


    সেচদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, খানাকুলের চক ভেদুয়া থেকে রূপনারায়ণ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ১৬ কিমি লম্বা অরোরা খাল। আরামবাগ মাস্টার প্ল্যানের প্রথম পর্যায়ে প্রায় সাড়ে চার কিমি খাল কাটা হয়। এবার দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় ১২ কিমির কাজ হবে। ৩০ থেকে ৪০ মিটার চওড়া হবে খালটি। খানাকুল-২ ব্লকের শসাখালিতে কংক্রিটের সেতুটি জগৎপুর ও ধান্যঘোড়ি পঞ্চায়েতের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। বর্তমানে সেখানে বাঁশের সাঁকো দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। 


    ঘোড়াদহ হাইস্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সমীররঞ্জন বিশ্বাস বলেন, এবার বন্যার সময়েও আমরা প্রায় ৪৫ মিনিট হেঁটে স্কুলে এসেছি। খালের উপর থাকা বাঁশের সাঁকো ভেঙে যায়। ফলে নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। এবার এক প্রসূতিকে হেঁটে দীর্ঘ পথ যাতায়াত করতেও দেখেছি। সেতুটি হলে এলাকার বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।


    রাজহাটির বাসিন্দা আনিসুল হক বলেন, অরোরা খালটির বেশিরভাগ অংশ মজে গিয়েছিল। তারফলে আমাদের এলাকায় বর্ষার সময় বন্যা হয়। খালটির আমূল সংস্কারের দাবি নিয়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় দরবার করেছি। অবশেষে সেটি হচ্ছে বলে আমরা খুশি।
  • Link to this news (বর্তমান)