জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১৫ বছর পর কেশিয়াড়ির বাড়িতে ফিরে এলেন গৃহবধূ
বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, মেদিনীপুর: ১৫ বছর পর বাড়ি ফিরলেন জবা সিং। সৌজন্যে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। উত্তর প্রদেশে বিয়ে হয়েছিল কেশিয়াড়ির নছিপুর এলাকার বাসিন্দা জবার। শ্বশুরবাড়ির লোকদের মারধর আর অত্যাচারে সেখান থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। তাঁর বাড়ির লোকজন তাঁর খোঁজ পাচ্ছিলেন না। মেয়ে বাড়ি ফিরে আসায় খুশি জবার পরিবারের লোকজন। জানা গিয়েছে, জবাকে দ্রুত লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী সহ বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় আনা হবে। এছাড়া তাঁকে প্রশাসনের তরফে কাউন্সেলিং করাও হবে। প্রশাসনের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, উত্তর প্রদেশ রাজ্যের মুরাদাবাদ থেকে জবাকে উদ্ধার করে পুলিস। জবার পরিবারের সম্মতি নিয়ে তাঁকে জেলায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ডেভেলপমেন্ট) কেম্পা হোনাইয়া বলেন, বিষয়টি নজরে আসার পরেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গৃহবধূর যাতে কোনও সমস্যা না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। গৃহবধূকে কিছুদিন অবজার্ভেশনে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, যোগী রাজ্যে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই জবার উপর অত্যাচার করা হতো। গৃহবধূর একটি সন্তান রয়েছে। পরে শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান জবা। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরিবারের সদস্যরাও বহু খোঁজাখুঁজির পর একেবারে হাল ছেড়ে দেন। পরিবারের সদস্যরাও একসময় ভেবেছিলেন তাঁকে আর কোনও দিন খুঁজেই পাওয়া যাবে না। জানা গিয়েছে, উত্তর প্রদেশের স্থানীয় প্রশাসন ওই গৃহবধূর খোঁজ পান। গৃহবধূ বাংলায় কথা বলায় তাঁদের সন্দেহ হয়। এরপর গৃহবধূর থেকে তাঁরা জানতে পারেন কেশিয়াড়ি এলাকার নাম। দ্রুত উত্তর প্রদেশ প্রশাসনের তরফে জেলার পুলিস ও প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। খবর আসা মাত্রই গৃহবধূর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। এরপর পরিবারের সম্মতি পাওয়া মাত্রই জবাকে ফিরিয়ে আনার প্রস্তুতি শুরু হয়।
গৃহবধূ জানিয়েছেন, নিজের জেলায় ফিরে আসতে পেরে ভালো লাগছে। খুব দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চাই। প্রশাসন খুবই সহযোগিতা করেছে। জেলা প্রশাসনের ওয়ান স্টপ সেন্টার বিভাগের সেন্টার অ্যাডমিনিস্ট্রেটর পারমিতা বক্সি ভট্টাচার্য বলেন, ওই গৃহবধূর সম্পর্কে জানার পরেই দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অসহায় মানুষের পাশে প্রশাসন সর্বদা আছে। গৃহবধূকে পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিতে পেরে ভালো লাগছে। গৃহবধূর জামাইবাবু মেঘনাদ সিং বলেন, শ্যালিকা ফিরে আসবেন বলে ভাবতেই পারিনি। বাইরের রাজ্যে খুঁজে পাওয়াও কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। ওখানকার ভাষা আমাদের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয়। এছাড়া আমাদের আর্থিক পরিস্থিতিও ভালো নয়। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতা ছাড়া কোনওভাবেই ওকে জেলায় ফেরানো সম্ভব হতো না। নিজস্ব চিত্র