নিজস্ব প্রতিনিধি রায়গঞ্জ ও সংবাদদাতা চোপড়া: রাসায়নিক সারের কালোবাজারি ও ভেজাল করার খবর আগেই পেয়েছে জেলা কৃষি দপ্তর। সেই মতো পুলিসকে সঙ্গে নিয়ে অভিযানে নেমে বুধবার চোপড়ার একাধিক সারের দোকানে হানা দেন দপ্তরের আধিকারিকরা। ধরা পড়ে নানা অসঙ্গতি। ভেজাল সার বিক্রি করা হচ্ছে সন্দেহে একটি দোকান থেকে নমুনাও সংগ্রহ করেন আধিকারিকরা। একজন ব্যবসায়ীকে ধরানো হয় শোকজের চিঠি। আর প্রশাসনিক ওই অভিযানের খবর পেয়ে দোকান বন্ধ করে পালান কয়েকজন সার ব্যবসায়ী।
কৃষি দপ্তর সূত্রে খবর, এদিন সকাল থেকে দফায় দফায় জেলা কৃষি আধিকারিক প্রিয়নাথ দাসের নেতৃত্বে কৃষি দপ্তরের আধিকারিকরা চোপড়ার লালবাজার, দাসপাড়া, মূলকডাঙ্গি এলাকায় হানা দেন। লালবাজার এলাকার একটি সারের দোকানে এই অভিযান চলাকালীন একাধিক অনিয়ম ধরা পড়ে। দোকানটিতে ছিল না কোনও পস (পয়েন্ট অব সেল) মেশিন। গরমিল ছিল দোকানে মজুত সারের হিসেবেও। লালবাজার এলাকায় সারের দোকানদার মুক্তার আলম কোনও তথ্য সঠিকভাবে দিতে পারেননি। এরপর খুঁটিয়ে অনুসন্ধান শুরু করতে চক্ষু চড়কগাছ সরকারি আধিকারিকদের। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, একটি খ্যাতনামা কোম্পানির সুপার ফসফেট সারের গুণমান যথেষ্টই নিম্নমানের। সন্দেহ তীব্র হতেই দোকান থেকে ওই সারের নমুনা সংগ্রহ করেন খোদ জেলা কৃষি আধিকারিক। তিনি এদিন অভিযান চলাকালীন বলেন, রবি মরশুম শুরু হলেই সার নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তাই সারের ভেজাল কারবার, নির্ধারিত মূলের বেশি নেওয়া, ভিনরাজ্যে এরাজ্যের সার পাচার, বিক্রেতারা সঠিক হিসেব রাখছেন কি না এরকম নানা বিষয়ে খোঁজ নিতেই আমাদের অভিযান। চোপড়ার একটি দোকানে এসে ব্যাপক গোলমাল নজরে পড়ে। আমাদের সন্দেহ একটি দোকানের সারে ভেজাল মেশানো হয়েছে। আমরা সেই সুপার ফসফেট সারের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পরীক্ষার জন্য পাঠাচ্ছি। ভেজাল ধরা পড়লে সরকারি নিয়ম অনুযায়ী ওই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। এদিন প্রশাসনিক অভিযানের খবর পেয়ে অনেক দোকানদার দোকান বন্ধ করে পালিয়ে গিয়েছে। আমরা তাদের ব্যাপারেও খোঁজখবর নিচ্ছি। এর আগেও জেলার গোয়ালপোখরে একটি ভেজাল সার কারখানার হদিশ মিলেছে। তাতে স্পষ্ট হয়েছে সার নিয়ে আন্তঃরাজ্য কোনও ভেজাল চক্র এসবের পিছনে রয়েছে। চোপড়াতেও এই কাণ্ডের স্পষ্ট যোগ থাকার সম্ভাবনা দেখছে কৃষিদপ্তর। সারের দোকানে কৃষিদপ্তরের অভিযান। - নিজস্ব চিত্র।