• আচমকা পরিদর্শনে ডিএম, দেওয়া হল সাসপেন্ড-লাইসেন্স বাতিলের হুঁশিয়ারি
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, মালদহ: এক কুইন্টাল ধানে নেওয়া হচ্ছিল তিন কেজি ধলতা। সারপ্রাইজ ভিজিটে গিয়ে গাজোলে কৃষকদের কাছে এমন অভিযোগ শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জেলাশাসক নীতিন সিঙ্ঘানিয়া। অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় পার্চেজ অফিসার থেকে রাইস মিল কর্তৃপক্ষ, প্রত্যেককেই কড়া ধমক দেন তিনি। অতিরিক্ত ধলতা নেওয়ার অভিযোগ খতিয়ে দেখে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশও দিয়েছেন জেলাশাসক। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ধলতা নেওয়া চলবে না। অ্যাভারেজ ময়েশ্চার কোয়ালিটি দেখে সরকার সবসময় টাকা দেয়। ধান কেনার সময় কোনও রাইস মিল কর্তৃপক্ষ কৃষকের কাছে ধলতা চাইলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে। একই সঙ্গে পার্চেজ অফিসারকেও সাসপেন্ড করতে পিছপা হবে না প্রশাসন। 


    মালদহে নভেম্বর থেকে কুইন্টাল প্রতি ২ হাজার ৩২০ টাকা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে খাদ্য দপ্তর। রাইস মিলের মাধ্যমে কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনছে সরকার। শুরু থেকেই মালদহের বিভিন্ন এলাকা থেকে অতিরিক্ত ধলতা নেওয়ার অভিযোগ আসছিল। কয়েকটি জায়গায় কৃষকরা প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভও দেখিয়েছিলেন। বিষয়টি জেলাশাসকের কানে যেতেই বুধবার তিনি আচমকা ধান ক্রয়কেন্দ্র পরিদর্শনে যান। দুপুরে খাদ্য দপ্তরের জেলা নিয়ামককে সঙ্গে নিয়েই প্রথমে তিনি গাজোল ব্লকের দেওতলা ফুটবল ময়দান কেন্দ্রে গিয়েছিলেন। 


    জেলাশাসক হুটার বাজিয়ে তাঁর সাদা রঙের গাড়ি নিয়ে ঢুকতেই যেন বুকে বল পান কৃষকরা। জেলাশাসক গাড়ি থেকে নামতেই তাঁর কাছে দৌড়ে যান কয়েকজন কৃষক। সরাসরি জেলাশাসককে অভিযোগ করেন, ধান বিক্রির সময় প্রতি কুইন্টালে তিন কেজি ধলতা নেওয়া হচ্ছে। ধানচাষিদের মুখ থেকে এই অভিযোগ শোনামাত্র প্রচণ্ড রেগে যান তিনি। এরকম অভিযোগের ক্ষেত্রে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানিয়ে দেন জেলাশাসক। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে,  মালদহে মোট ৩৫ টি সিপিসি (সেন্ট্রালাইজড প্রকিওরমেন্ট সেন্টার) বা ধান ক্রয়কেন্দ্র রয়েছে। যার মধ্যে প্রত্যন্ত এলাকাগুলির জন্য ১০ টি মোবাইল ধান ক্রয়কেন্দ্র ব্যবহার করা হচ্ছে। প্রত্যেকটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকেন একজন করে পার্চেজ অফিসার। জেলাশাসক এদিন স্পষ্ট নির্দেশ দেন, যে সিপিসির বিরুদ্ধে ধান কেনার সময় ধলতা নেওয়ার অভিযোগ উঠবে, সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রের অফিসারকে সাসপেন্ড করা হবে। ওই কেন্দ্রের সঙ্গে যে রাইস মিলকে ট্যাগ করা হয়েছিল, বাতিল করা হবে তাদের সঙ্গে চুক্তিও। পূর্ণাঙ্গ তদন্তে অনিয়ম প্রমাণিত হলে রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিতেও পিছপা হবে না প্রশাসন। নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)