মমতার বার্তার পর আইপ্যাকের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক নিয়ে বাড়ছে জল্পনা
বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: তৃণমূলের পরামর্শদাতা সংস্থাকে আদৌ কোনও তথ্য দেওয়া হবে কি? দিলেও কতটুকু? এসব প্রশ্নে এখন জেলায় জেলায় তৃণমূলের অভ্যন্তরে বিস্তর জল্পনা চলছে। তৃণমূলের একাধিক বিধায়ক ও বর্ষীয়ান নেতা সতর্কভাবে বলছেন, ‘সব দিক বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। প্রথমেই মুখ না খুলে দলের সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন।’ পাশাপাশি, সাংগঠনিক পরিসরে দিল্লি ও কলকাতায় একাধিক পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল। আলোচনায় ছাত্র, যুব শাখার জন্য নতুন নামও উঠে এসেছে। সেলেব্রিটি জগতের বাইরে এবং রাজনীতির সঙ্গে সংশ্রব রয়েছে, এমন মুখ নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। রাজ্যের দুই মন্ত্রীর মেয়ে ও ছেলে রাজনীতিতে ইদানীং সক্রিয় রয়েছেন। তাঁদের নাম নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
তৃণমূলের প্রচার, বিভিন্ন কর্মসূচির রূপরেখা প্রণয়ন, সম্ভাব্য প্রার্থী খোঁজা, নেতাদের পারফরম্যান্স নিয়ে রিপোর্ট তৈরি—যাবতীয় কাজগুলি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছে পরামর্শদাতা সংস্থা আইপ্যাক। কিন্তু পেশাদার এই সংস্থা সম্পর্কেও কিছু তথ্য তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে এসে পৌঁছেছে। তার পরিপ্রেক্ষিতেই সোমবার বিধানসভায় দলের পরিষদীয় দলের বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে মমতা বলেছেন, ‘কে কোথায় প্যাক প্যাক করল, তা দেখার দরকার নেই। কোনও সমীক্ষক সংস্থা ফোন করলে বা কাছে গিয়ে তথ্য চাইলেই সব দিয়ে দেবেন না। ভেবেচিন্তে এবং খোঁজখবর নিয়েই যা করার করবেন। দলের কাছ থেকে সব জেনে নেবেন।’
নেত্রীর ওই বার্তার পর থেকেই আইপ্যাক নিয়ে প্রবল গুঞ্জন শুরু হয়েছে তৃণমূলের অন্দরে। বিধানসভায় তৃণমূল বিধায়কদের এই বিষয় নিয়েই মশগুল থাকতে দেখা যায়। করিডরে দাঁড়িয়ে এক মন্ত্রী বলেন, ‘আমার ৫৪ বছর বয়স। ছাত্র রাজনীতির সময় থেকে দল করছি। এখন ওই পরামর্শদাতা সংস্থার ২৪-২৫ বছরের এক ছেলে এসে কী বলল, সেটা আমাকে অক্ষরে অক্ষরে শুনতে হবে কেন? ওর নির্দেশ আমাকে মানতে হবে কেন?’ তৃণমূলের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, ‘পরামর্শ দিতে পারে। কিন্তু ওই সংস্থা যদি নির্দেশ দেয়, সেটা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’ আবার তরুণ প্রজন্মের এক বিধায়ক বলেছেন, ‘পরামর্শদাতা সংস্থার চিন্তাভাবনা ও কার্যকলাপ যথেষ্ট আধুনিক। বাস্তব পরিস্থিতির উপযোগীও বটে।’ তবে জেলাস্তরের একাধিক নেতা বলছেন, ‘ব্লক বা অঞ্চল সভাপতি কে হবেন, তা দলই ঠিক করুক। কোনও পরামর্শদাতা সংস্থা নয়।’ এদিকে, নেত্রীর নির্দেশ আসার পর মঙ্গলবার দলীয় বিধায়কদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ তৈরি করেছেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস। ওই গ্রুপের অ্যাডমিন একমাত্র অরূপবাবুই। প্রায় ২২০ জন বিধায়ক ওই গ্রুপের সদস্য। সবাইকে ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেই নজর রাখতে বলা হয়েছে। সেখানেই সময়মতো বার্তা পৌঁছে যাবে। সংগঠনের সামগ্রিক বিষয় দেখভালের ক্ষেত্রে এখন গুরুত্বপূণর্ণ ভূমিকায় থাকছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তৃণমূল ভবনে তাঁকে সাহায্য করছেন সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার।