প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির হাতে প্রথম গ্রেফতার হন পার্থ। ইডির মামলা কলকাতার বিচার ভবনে চলে। সিবিআইয়ের মামলা চলে আলিপুরের কোর্টে। ইডির আবেদন ছিল যে, পার্থের বিরুদ্ধে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে সিবিআইয়ের করা মামলারও শুনানি হোক বিচার ভবনে, যে হেতু মামলার ধরন একই রকম। সেই আবেদন মেনে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ইডি এবং সিবিআইয়ের করা মামলার শুনানি শুরু হয় বিচার ভবনে একই এজলাসে। পরবর্তী কালে ইডির মামলা চলে যায় অন্য এজলাসে। সিবিআইয়ের মামলাও ওই এজলাসে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবার আবেদন জমা পড়ে বিচার ভবনে। ইতিমধ্যে পার্থকে গ্রেফতার (শোন অ্যারেস্ট) করে সিবিআই। সিবিআইয়ের মামলাতেও জামিন চেয়ে বিচার ভবনে আবেদন করেন পার্থ।
আদালত সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবার ১ নম্বর এজলাসেই বিচারককে ওই মামলাটি শোনার আর্জি জানান পার্থের আইনজীবী। জানান যে, যে হেতু সিবিআইয়ের মামলাটি ইডির আর্জি মোতাবেক এখনও অন্য কোর্ট বা এজলাসে স্থানান্তরিত হয়নি, তাই এই এজলাসেই সেটা শোনা হোক। তার পরেই ওই আইনজীবীকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।
বুধবার সুপ্রিম কোর্টে জামিন মামলার শুনানিতেও ভর্ৎসিত হতে হয়েছিল পার্থকে। ওই দিন পার্থের আইনজীবী মুকুল রোহতগি প্রাক্তন মন্ত্রীর জামিন চেয়ে সওয়াল করেন। বিচারপতিরা জানান, পার্থ যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, তবে এ ভাবে তাঁর জামিন পাওয়া উচিত নয়। বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ রোহতগির উদ্দেশে বলে, “এই মামলায় বাকিরা জামিন পেতেই পারেন। তাঁরা তো কেউ মন্ত্রী নন। আপনার মক্কেল মন্ত্রী ছিলেন। তিনি যদি দুর্নীতিগ্রস্ত হন, সমাজকে আমরা কী বার্তা দেব? একজন দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি কি এ ভাবে জামিন পেতে পারেন?”
বিচারপতি কান্ত বলেন, “সবাই তো শিক্ষামন্ত্রী নন। নিজের দিকে দেখুন। আপনার মক্কেলের বাড়ি থেকে কোটি কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে।” রোহতগি বলেন, “ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হলে তার দায় পার্থের নয়।” বিচারপতি কান্ত বলেন, “মন্ত্রী হয়ে পার্থ নিশ্চয়ই নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দিতেন না। তাই হয়তো ডামি ব্যক্তিকে সামনে রেখে তিনি দুর্নীতি করেছেন। ওঁর পরিচিত বা ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধার হয়েছে। এই অবস্থায় ওঁকে জামিন দিলে তদন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।”